পাকিস্তানের কাছে ধরাশায়ী ‘হট ফেবারিট’ ইংল্যান্ড

প্রকাশিত

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ আর সাম্প্রতিক দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের কারণে শিরোপার লড়াইয়ে এবারের হট ফেবারিট ইংল্যান্ড। তবে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই পরাজয়ের স্বাদ নিতে হলো স্বাগতিকদের। সেটাও আবার পাকিস্তানের কাছে যারা নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১০৫ রানে অল-আউট হয়েছিল! আজ পাকিস্তানের ৩৪৮ রান তাড়া করে ৯ উইকেটে ৩৩৩ রানেই থামে ইংল্যান্ড। পাকিস্তান জয় পায় ১৪ রানে। জো রুট আর জস বাটলারের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিও ইংল্যান্ডের হার বাঁচাতে পারেনি।

নটিংহ্যামের ট্রেন্টব্রিজে পাকিস্তানের পর্বতপ্রমাণ রান তাড়া করতে নেমে বিপদে পড়ে যায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। দলীয় ১২ রানে জেসন রয়কে (৮) এলবিডাব্লিউ করে প্রথম আঘাত হানেন শাদাব খান। এরপর ৪৮ রানের জুটি গড়ে জনি বেয়ারস্টো আর জো রুট পরিস্থিতি অনেকটা সামলে নেওয়ার পর আবারও বিপদ। ৩১ বলে ৩২ রান করা বেয়ারস্টো ওয়াহাব রিয়াজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন। ৯ রান করে অধিনায়ক এউইন মরগান বোল্ড হয়ে যান মোহাম্মদ হাফিজের বলে। অল-রাউন্ডার বেন স্টোকসও আজ কিছু করতে পারেননি। আউট হয়েছেন মাত্র ১৩ রানে।

ম্যাচের এই মুহূর্তে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন জো রুট এবং জস বাটলার। মাত্র ৭৯ বলে দুজনের জুটি একশ ছাড়িয়ে যায়। এরপরেই নিজের ১৫তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন জো রুট। ৯৭ বলে ৯ চার ১ ছক্কায় অংক স্পর্শ করেন তিনি। চলতি বিশ্বকাপে এটাই প্রথম সেঞ্চুরি। রুটকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে তিন অংকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন বাটলার। তবে এই সুখ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১০৪ বলে ১০৭ রান করা রুটকে শাদাব খান ফিরিয়ে দিলে ভাঙে ১৩০ রানের জুটি। রুটের হতাশ মুখ যেন বলছিল, সুযোগটা হাতছাড়া! উইকেটে আসেন মঈন আলী।

৭৫ বলে ৯ চার ২ ছক্কায় দুর্দান্ত সেঞ্চুরি তুলে নেন জস বাটলার। তবে ১০৩ রানেই তাকে ওয়াহাব রিয়াজের তালুবন্দি করে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠন মোহাম্মদ আমির। ক্রিস ওকস আর মঈন আলী এগিয়ে নিচ্ছিলেন ইংল্যান্ডকে। ৪৮তম ওভারের পঞ্চম বলে ওয়াহাব রিয়াজ তুলে নেন মঈনকে (১৯)। শেষ বলে তুলে নেন ক্রিস ওকসকে (১৪)। ৮ উইকেট হারিয়ে যেন আশা শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের। পরের ওভারে এসে জোফরা আর্চারকে তুলে নেন আমির। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৫ রান। ইংল্যান্ডের শেষ উইকেট জুটি এই হিসাব মেলাতে পারেনি।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ৩৪৮ রানের পাহাড় গড়ে পাকিস্তান। দুর্দান্ত শুরু এনে দেন ইমাম উল হক এবং ফখর জামান। কোনোভাবেই ইংলিশ বোলাররা সুবিধা করতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত মঈন আলীর বলে জস বাটলারের কৃতিত্বে স্টাম্পড হয়ে যান ৪০ বলে ৩৬ রান করা ফখর জামান। অপর ওপেনার ইমাম উল হক ৫৮ বলে ৪৪ রান করে মঈনের দ্বিতীয় শিকার হন। সহজ ক্যাচ দিয়ে জেসন রয়ের কল্যাণে বেঁচে যাওয়া বাবর আজম হাত খুলতে শুরু করেন। মোহাম্মদ হাফিজের সঙ্গে তার দুর্দান্ত জুটি গড়ে ওঠে।

৮৮ রানের দুর্দান্ত জুটি ভাঙে বাবর আজমের বিদায়ে। ৬৬ বলে ৬৩ রান করা পাকিস্তানের এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মঈন আলীর বলে ক্রিস ওকসের তালুবন্দি হন। এরপরেও তরতর করে এগিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানের ইনিংস। হাফিজের সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক সরফরাজ। ৪০ ওভারেই আড়াইশ ছাড়িয়ে যায় দলীয় স্কোর। দারুণ ব্যাটিংয়ে তিন অংকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন হাফিজ। কিন্তু দূর্ভাগ্য তার। ৬২ বলে ৮ চার ২ ছক্কায় ৮৪ রানে মার্ক উডের বলে সেই ওকসের তালুবন্দি হন তিনি। সরফরাজ ৪৪ বলে ৫৫ করে ওকসের শিকার হন। শেষের দিকে ছোট ছোট অবদানে নির্ধারিত ৫০ ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ৩৪৮ রান।

আপনার মতামত জানান