দিল্লিতে মুসলিম ভয়ংকর তথ্য বেরিয়ে আসছে
ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধিতাকারী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরো দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। হতাহতদের বেশিরভাগই মুসলিম।
দিল্লির গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে গতকাল বুধবার হতাহতদের স্বজনদের ব্যাপক ভিড় লেগেছে। নিহতদের লাশ পাওয়ার আশায় হাসপাতালের লাশঘরের বাইরে অপেক্ষা করছেন তাদের স্বজনরা।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে ভয়ংকর কিছু ঘটনা ঘটেছে। একের পর এক ক্ষতবিক্ষত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাদের কেউ গুলিবিদ্ধ, আবার কারো মাথা থেঁতলে গেছে হাতুড়ির আঘাতে।
এক ব্যক্তির শরীরে পাঁচটি গুলি লেগেছে। এমনকি তার মুখ এবং মাথার কয়েক জায়গা ক্ষতবিক্ষত হয়ে পুরো শরীর রক্তে ভিজে গেছে। আরো দু’জনকে গতকাল বুধবার বিকেলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে একেবারে অচেতন অবস্থায়। তাদের শরীরে এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে।
সেলিম নামে এক ব্যক্তি তার স্বজনের মরদেহ গ্রহণের জন্য অপেক্ষায় আছেন। ইশরাক হাসান নামে ২৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির দেহ মর্গে রয়েছে। সেলিম বলেন, ইশরাকের শরীরে পাঁচটি গুলি লেগেছে। মঙ্গলবার বিকেলে মুস্তাফাবাদে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তিনি। মাথা ও বুকে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের ক্ষত রয়েছে। সম্ভবত তলোয়ার দিয়ে আঘাত করা হয়েছে তাকে।
২১ বছর বয়সী আবদুস সামাদ গিয়েছিলেন নামাজ পড়তে। মুস্তাফাবাদ এলাকার একটি মসজিদে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে ধরে রড দিয়ে পেটানো হয়। তবে তিনি বেঁচে গেছেন। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ওই মসজিদে যারা যারা ছিল, সবাইকে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে।
মুহাম্মদ সাহিল নামে এক তরুণের বাবাকে নিজের বাড়ির বাইরে গুলি করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবারের ওই ঘটনায় আহত বাবাকে বাঁচাতে পুলিশের সহায়তা চেয়ে হতাশ হয়েছেন সাহিল।
তিনি আরো বলেন, একপর্যায়ে খুব কষ্ট করে গভীর রাতে বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাবাকে বাঁচাতে পারিনি।
পুলিশের ব্যাপারে অভিযোগ ওঠার পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসায় গাফিলতিরও অভিযোগ উঠেছে। অনেকেই বলছেন, আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যও দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে আহতদের স্বজনদের।
আপনার মতামত জানান