ঢাকা বিভাগে নৌকার মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে যারা

প্রকাশিত


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য তিন হাজার ৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৭০টি আসনের বিপরীতে মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ৭৩০টি।

আগামীকাল রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় মনোনয়নপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে দলীয় একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এর আগে শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় দলীয় ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় সব মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে মতবিনিময় করবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা বিভাগের ৭০টি আসনে প্রার্থিতা নিশ্চিতের দৌড়ে এগিয়ে থাকা সম্ভাব্যদের নাম জানতে তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধিরা। বিভিন্ন সমীকরণ মিলিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীতায় এবার চমক থাকতে পারে বলে জানা গেছে।

ঢাকা জেলা
ঢাকা-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান ছাড়াও মনোনয়ন ফরম তুলেছেন মোহাম্মদ লিয়াকত আলী। তবে জানা গেছে, এবারও সালমান এফ রহমান দলের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন।

ঢাকা-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী মিজানুর রহমান, ডা. হাবিবুর রহমান, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার শাহজাহান, শাহিন আহমেদ, ইসতিয়াক আহমেদ, আবদুর রহমান। তবে এবারও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম নৌকা পেতে পারেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী দুইজন। বর্তমান সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ বিপু এ আসন থেকে নৌকা পেতে পারেন বলে জোর আলোচনা রয়েছে। এছাড়া আসনটি থেকে মশিউর রহমান নৌকার মনোনয়ন ফরম তুলেছেন।

ঢাকা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী গোলাম সারোয়ার খান, সানজিদা খানম, জগলুল কবির, আওলাদ হোসেন, কাজী হাবিবুর রহমান হাবু, দিলীপ কুমার রায়, মিরাজ হোসেন, শফিকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম খান, আসাদুজ্জামান মোল্লা, আকাশ কুমার ভৌমিক, তাজুল ইসলাম, শেখ মো. আজহার, ওবায়দুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, হারুন অর রশিদ ও কে এম শহিদুল্লাহ।

আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। জাতীয় পার্টিকে এবারও আসনটি ছেড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

ঢাকা-৫ আসনে উপনির্বাচনের মাধ্যমে কাজী মনিরুল ইসলাম মনু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। রফিকুল ইসলাম খান মাসুদ, চৌধুরী সাইফুন্নবী সাগর, শফিকুল ইসলাম খান, মো. আতিকুর রহমান, হারুন অর রশিদ, কামরুল হাসান, মাহমুদুল হাসান, কে এনায়েতউল্লাহ, কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, মো. মামুন, হেফজল বারি মোহাম্মদ ইকবাল, হারুন অর রশিদ মুন্না, মশিউর রহমান সজল ও মিজানুর রহমানরা মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেও বর্তমান সংসদ সদস্যের ওপরেই দলের ভরসা থাকতে পারে বলে জানা গেছে।

ঢাকা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- সাঈদ খোকন, আবু আহমেদ মন্নাফি, হাসনা বেগম, আবুল হোসেন, তানভীর আহমেদ ইমরান, নজিবুল্লাহ হিরু, শহিদ উল্লাহ, হেদায়েতুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, জাকের পারভেজ অপু, আসাদুর রহমান খান, চৌধুরী আশিকুর রহমান, এইচ এম রেজাউল করিম, শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সালাউদ্দিন বাদল। জানা গেছে, এ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন।

ঢাকা-৭ আসনে হাজী মো. সেলিমের পরিবার ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা দীর্ঘদিনের। আসনটিতে নৌকা চান আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। তাদের পাশাপাশি আসনটি থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী গোলাম মোস্তফা, হাজী মো. সেলিম, সোলায়মান সেলিম, ইরফান সেলিম, মাহমুদুল হাসান, সঙ্গিতা বিশ্বাস, ওমর বিন আব্দুল আজিজ, নাজমুল হক, হাসিবুর রহমান, আখতার হোসেন, মুসফিকুর রহমান ও মিল্টন শিকদার।

তবে এ আসন থেকে হাজী সেলিমের বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম নৌকা পেতে পারেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাঈদ খোকন, এমএম মনিরুল ইসলাম, ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন, শিরিন নাঈম, হেফজল বারি মোহাম্মদ ইকবাল, কামাল চৌধুরী, নজরুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম সাঈদ, মোজাফফর হোসেন পল্টু, ফরিদা আক্তার, আওলাদ হোসেন, মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসার, কাজী জাহানারা ইয়াসমিন, শাহ মনজুরুল হক, সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলী ও মুখলেসুর রহমান। তবে এ আসনে নৌকা পাওয়ার আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

ঢাকা-৯ আসনে সাবের হোসেন চৌধুরী, আনিসুর রহমান, মো. গিয়াস উদ্দিন সরকার পলাশ ও মিজানুর রহমান হোসেন মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীই বহাল থাকার সম্ভাবনা বেশি।

ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী দিল আরা খানম ডলি, আসরাফুল আলম, সাফিয়া খাতুন, রফিকুল ইসলাম বাবলা, শেখ সাইদুর রহমান, ইখলাসুর রহমান, ড্যানি সিডাক, রইচ উদ্দিন আলম মোল্লা, এস এম জাহাঙ্গীর আলম, পারভীন হক শিকদার, সাকিব আল হাসান, শফিউল ইসলাম, কামাল আহমেদ, মোমতাজ উদ্দিন ফকির, এম এম কামরুল আহসান, সেলিনা শাহনাজ ও কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এই আসনে অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ নৌকা পেতে পারেন।

ঢাকা-১১ আসনে এবার নির্বাচন না করার সম্ভাবনার কথা আগেই জানিয়েছিলেন আসনটির সংসদ সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহ। আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা নিজের জায়গায় ছেলেকে দাঁড় করাতে চান। এবার আসনটি থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী তালিকায় তার নামও আছে। পাশাপাশি হেদায়েত উল্লাহ, এ এম জাহাঙ্গীর আলম, মো. শাহজাহান, ইদ্রিস আলী মোল্লা, বশির আহমেদ, শফিকুল ইসলাম, মাসুম গনি, এ কে এম রহমত উল্লাহ, খন্দকার মমিনুর আলম, জাহাঙ্গীর আলম, কহিনুর আক্তার বিথি, আবু তৌহিদ, জাহানারা বেগম, শামিমা ফয়েজ, শামসুন্নাহার আলম, সাকিবুর রহমান, মফিজুল ইসলাম ও ওয়াকিল উদ্দিন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

মনোনয়নপ্রত্যাশী তালিকায় থাকা হেদায়েত উল্লাহ, এ কে এম রহমত উল্লাহর ছেলে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার বাবার জায়গায় নৌকা পেতে পারেন তিনি।

ঢাকা-১২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনজন। তারা হলেন- আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবিনা ও আ ক ম জামান উদ্দিন। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নৌকা পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশ প্রখর।

ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. সোলায়মান, খন্দকার শিমুল বিল্লাহ, নূরে আলম সিদ্দিকী, শেখ বজলুর রহমান, এম এ সাত্তার, লায়লা আক্তার, সাদেক খান ও শিরিন আহমেদ। এবার নিজের জায়গায় ফিরতে পারেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।

ঢাকা-১৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- এ কে এম মতিউর রহমান, আবু তাহের, মো. লুৎফর রহমান, কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী, আগা খান মিন্টু, মিজানুর রহমান, এ বি এম মাজহারুল আলম, মাকসুদা হক, এ কে এম দেলোয়ার হোসেন, মাইনুল হোসেন খান নিখিল, মো. মহিবুল্লাহ, হায়দার আলী খান, সাবিনা আক্তার তুহিন, এম এন হানিফ, কাজী আশরাফ, রাজিয়া সুলতানা ইতি, সোহরাব হোসেন, দেওয়ান আব্দুল মান্নান, আব্দুর রউফ শিকদার, এখলাস উদ্দিন মোল্লা, মুজিব সারোয়ার মাসুম, খন্দকার শফিউল আজম, সর্দার মোহাম্মদ মান্নান, কাজী আসাদুল কবির ও এম এ সেলিম খান।

ধারণা করা হচ্ছে- বর্তমান সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টুর ওপরই দল ভরসা রাখতে পারে।

ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার। তার জায়গায় মনোনয়ন চান সাইফুল্লাহ সাইফুল, হুমায়ূন রশিদ, আবুল বাশার, এস এম আবুল কাসেম ও মেজবাউল হক সাচ্চু। তবে এ আসনে নৌকার মাঝি বদলের সম্ভবনা নেই বলেই জানা গেছে।

ঢাকা-১৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা। আসনটি থেকে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সালাম হোসেন চৌধুরী, কাজী মোসাররফ হোসেন কাজল, সালাউদ্দিন রবিন, আবদুর রউফ নান্নু, শাহরুখ খান, ইসমাইল হোসেন, আশিকুল ইসলাম ও শাহিদা তারেক দিপ্তী। তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসনটিতে প্রার্থী পরিবর্তনের কথা ভাবছে না আওয়ামী লীগ।

ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী- মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সৈয়দ তানভীর ইমাম, শামসুদ্দোহা খন্দকার, ওয়াকিল উদ্দিন, এ কে এম জসিম উদ্দিন, আরাফাত আশওয়াদ ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমান, আবু সাঈদ, মো. আরফাতুল রহমান, প্রদীপ আলেক সিরাস ডি কস্তা, হেফজল বারি মোহাম্মদ ইকবাল, আব্দুল কাদের খান ও নূরজাহান বেগম। আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাতকেই পুনরায় দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে এটা অনেকটা নিশ্চিত।

ঢাকা-১৮ আসনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী- সাইফুল ইসলাম, রৌশান হোসেন পাঠান, আবেদ মনসুর, নির্মল ডি কস্তা, আনিছুর রহমান, আফসার উদ্দিন খান, বশির উদ্দিন, আব্দুল বাতেন, জাহিদুল ইসলাম মোল্লা, খসরু চৌধুরী, হেফজল বারি মোহাম্মদ ইকবাল, রোকেয়া বেগম, শেখ মামুনুল হক, এম এম তোফাজ্জল হোসেন, নাজিমউদ্দিন, মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী, মালেকা পারভীন, বর্ষান ইসলাম, মতিউর রহমান, আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল ওয়াদুদ, সরদার ফয়সাল আহমেদ, এ কে এম মাসুদুজ্জামান, কামাল উদ্দিন, নাজমা আক্তার, মাহবুবুর রহমান হিরণ, নাজমা আক্তার ও হাবিব হাসান।

আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিব হাসান পুনরায় নৌকা পাচ্ছেন বলে আলোচনা রয়েছে।

ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী- বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান, মঞ্জুরুল ইসলাম রাজীব, টি এম তাহমিদ জং, আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, তালুকদার মোহাম্মদ তৌহিদ জং মোরাদ, মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ইলোরা খান মজলিস ও ফারুক হাসান তুহিন। এই আসনেও পরিবর্তনের কোনো আভাস নেই বলে জানা গেছে।

ঢাকা-২০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ, মোখলেস-উজ-জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা, আব্দুল আলিম খান, মোহাদ্দিস হোসেন, এম এ মালেক, গোলাম কবির, আহমেদ আল জামান, এনামুর হক, সোহানা জেসমিন, মীর কামরুন্নাহার, সুধীর চৌধুরী, মিজানুর রহমান মিজান, চৌধুরী আলী আহমেদ ও মনোয়ার হোসেন। এখানেও পরিবর্তনের কোনো আভাস নেই বলে জানা গেছে।

মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ২৩ জন। এর মধ্যে মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর-দৌলতপুর-শিবালয়) আসনে কিনেছেন ৮ জন। মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়। তিনি মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে দুইবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এবার দলীয় মনোনয়ন পেলে টানা তিনবার সংসদ সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মনোয়ন দৌড়ে পিছিয়ে নেই জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সালউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ। তিনি গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। যদি কোনো কারণে নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া না হয়, তাহলে এস এম জাহিদের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আনোয়ারুল হক, দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম রাজা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর-হরিরামপুর ও সদর উপজেলার তিনটি ইউপি) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে আছেন। তিনি ২০০৮ এর সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার মনোনয়ন পেলে তিনিও টানা তিনবার সংসদ সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এই আসনে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন সিংগাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহম্মেদ টুলু, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী।

মানিকগঞ্জ-৩ (মানিকগঞ্জ সদর-সাটুরিয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও চান এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা জাহিদ মালেককেই নৌকার মনোনয়ন দেবেন। তবে আলোচনায় আছেন অন্য দুই প্রার্থী অ্যাডভোকেট বাদরুল ইসলাম খান বাবলু ও তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান।

রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর দুইটি আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১৬ জন। এর মধ্যে রাজবাড়ী-১ (সদর-গোয়ালন্দ) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। তিনি এই আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয়রা মনে করেন এবারও তিনি মনোনয়ন পাবেন। তবে যদি কোনো কারণে তিনি মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েন তাহলে কাজী কেরামত আলীর আপন ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী মনোনয়ন পেতে পারেন।

রাজবাড়ী-২ (পাংশা-বালিয়াকান্দি-কালুখালী) আসনে দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.জিল্লুল হাকিম। তিনি এই আসন থেকে চারবারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয় ও তৃণমূল পর্যায়ে তার অবস্থান ভালো, দলকে সুসংগঠিত করতে তার অবদান বেশি। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন এবারও তিনি মনোনয়ন পাবেন।

তবে তিনি মনোনয়ন না পেলে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু দলের মনোনয়ন পেতে পারেন।

কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনে নৌকার মাঝি হতে ৫৩ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। জেলার ১৩টি উপজেলা নিয়ে ছয়টি সংসদীয় আসন গঠিত। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ-৩ ও ২ আসনে সবচেয়ে বেশি নৌকার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. জাকিয়া নূর লিপি। তবে একই আসনে দলের মনোনয়ন চাইছেন তার আপন ভাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) সাফায়েতুল ইসলাম। স্থানীয়দের ধারণা সৈয়দ পরিবারের বাইরে দলের মনোনয়ন যাবে না। বর্তমান সংসদ সদস্য মনোনয়ন থেকে ছিটকে গেলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন মনোনয়ন পেতে পারেন বলে ধারণা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের।

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদি-পাকুন্দিয়া) আসনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ। তিনি মনোনয়ন না পেলে সাবেক সংসদ সদস্য ও পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন। এছাড়া আসনটিতে অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ আফজাল মনোনয়ন পেতে পারেন।

কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হলেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতায় বার বার ছেড়ে দিতে হয়েছে। বিগত তিনটি নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু থাকায় আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি। যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটগত সমঝোতা না হয় তাহলে করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ মনোনয়ন পেতে পারেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক এডিসি মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য এরশাদ উদ্দিন এই তালিকায় এগিয়ে থাকবেন।

কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক রাষ্ট্রপতিপুত্র রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক। এছাড়া ঢাকায় আইন পেশায় নিয়োজিত আব্দুল হামিদ নামের একজন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করছেন এই আসনে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিকই দলের মনোনয়ন পাবেন।

কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসেন। নৌকার মনোনয়ন থেকে তিনি ছিটকে গেলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় পর্ষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এ আসনটিতে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. আলাউল হক, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে একাই আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র নিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন।

ফরিদপুর

ফরিদপুর জেলার ৪টি আসনে মনোনয়ন কিনেছেন ৪৩ জন। এদের মধ্যে ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান মনোনয়ন পেতে পারেন বলে বেশ জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার মনোনয়ন পেলে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করবেন। এছাড়া এই আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী সিরাজ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন।

ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা) আসনে এবার বেশ জোরেশোরে নাম শোনা যাচ্ছে আওয়ামী যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের। যদিও তিনি ফরিদপুর-৪ আসনের জন্যও মনোনয়ন কিনেছেন তবে এবার ফরিদপুর-২ এ তিনি নৌকার মাঝি হতে পারেন বলে জেলার অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন।

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ব্যবসায়ী এ.কে.আজাদ। তার পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের কথাও ভাবছেন অনেকে।

ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা) আসনে বেশ নিশ্চিত করেই অনেকে বলছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফরউল্লাহ নৌকা পাবেন। এই আসনে নৌকার জন্য কাজী জাফরউল্লাহর পাশাপাশি মনোনয়ন কিনেছেন মুজিবুর রহমান নিক্সন।

মাদারীপুর

মাদারীপুর জেলার তিনটি আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৯ জন। তবে দলীয়ভাবে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকাকে জয়ী করতে কাজ করবেন জেলার নেতাকর্মীরা।

মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূরে ই আলম চৌধুরী ছাড়া আর কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

মাদারীপুর-২ (মাদারীপুর সদর-রাজৈর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। এছাড়া এই আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও দলীয় মনোনয়ন চাইছেন।

মাদারীপুর-৩ (কালকিনি-ডাসার ও সদর আংশিক) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। তিনি দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম ফারুক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন ও সৈয়দ আবুল হাসানও মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন।

নরসিংদী

নরসিংদী-১ (সদর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরু এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন। তবে তিনি কোনো কারণে মনোনয়ন থেকে বাদ পড়লে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন
আলোচনায় রয়েছেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুলও মনোনয়ন দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন।

নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সৈয়দ জাবেদ হোসেন, সাবেক বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরী মনোনয়ন ক্রয় করেছেন। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপের মনোনয়ন পাওয়ার বেশ সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীসহ জনসাধারণ।

নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূঁইয়া রাখিলসহ অনেকেই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশীদ হত্যা মামলার অভিযোগ থাকায় বর্তমান এমপি জহিরুল হক ভুঁইয়া মোহন এবার মনোনয়ন না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে বলে ধারণা করছেন উপজেলাবাসী। সে ক্ষেত্রে সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও সামসুল আলম ভুঁইয়া রাখিল দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন।

নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও তার ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল মজিদ মাহমুদ চন্দন, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী খান রিপন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলামসহ অনেকেই মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের বিকল্প নেই বলে ধারণা করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে এবারও মনোনয়ন চাচ্ছেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, তার স্ত্রী কল্পনা রাজিউদ্দিন, ভাই সালাহ উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, ছেলে রাজিব আহমেদ পার্থ। বর্তমান সংসদ সদস্য এই আসন থেকে টানা ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবার তিনি মনোনয়ন না পেলে এই আসনে রিয়াজুল কবীর কাউসার কিংবা রিয়াদ আহমেদ সরকার মনোনয়ন পেতে পারেন বলে ধারণা করছেন উপজেলাবাসী।

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল জেলার আটটি আসনের মধ্যে তিনটি আসনের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে বেশ সরগরম রয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) রয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। এছাড়া টাঙ্গাইল-৩ (কালিহাতী) আসনে সাবেক আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

কৃষিমন্ত্রীর আসনে তার বোন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা মনোনয়নপত্র ক্রয় করে জমা দিয়েছেন। এছাড়া টাঙ্গাইল-৩ (কালিহাতী) আসনে সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ছাড়াও তার ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছেন।

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, তার বোন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যাপক মেহেরুল হাসান সোহেলসহ বেশ কয়েকজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে এই আসনে কৃষিমন্ত্রীই নৌকা পাচ্ছেন বলে দলীয় নেতা-কর্মীরা মনে করছেন।

টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে আটজন প্রার্থী আলোচনায় রয়েছেন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির, ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদ, সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামানের ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল, গোপালপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি।

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে ১২ জন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান, তার ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এস আকবর খান মনোনয়ন পাওয়ার জন্য জোর লবিং করছেন।

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে ১০ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে আলোচনায় আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, এফবিসিসিআই’র পরিচালক আবু নাসের ও মুরাদ সিদ্দিকী।

টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, তিনবারের সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী এই আসন থেকে মনোনয়ন চাইছেন।

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে ১৮ জন প্রার্থী রয়েছেন। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য তারানা হালিম, নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম, জেলা
আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তারেক শামস খান হিমু, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি এটিএম কাজী আনিসুর রহমান বুলবুলসহ আরও অনেকেই দলীয় মনোনয়ন চাইছেন।

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার টিকিট চাইছেন ১১ জন প্রার্থী।
বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আহমেদ শুভ, মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য রাফিউর রহমান খান, কেন্দ্রীয় বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল ইসলাম জহির, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ থেকে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকাসহ (বীর প্রতীক) অনেকেই মনোনয়ন চান।

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) কাদের সিদ্দিকী এ আসনে প্রার্থী হওয়ায় জেলায় এ আসনটি সর্বাধিক আলোচিত। বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের), সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরপর দুইবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত শিকদার, সাবেক সংসদ সদস্য সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহান জয়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আতাউল মাহমুদ মনোনয়ন চাইছেন।

শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের তিনটি আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৪১ জন।

শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এবং শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন।

এছাড়া শরীয়তপুর-১ আসন থেকে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, শরীয়তপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল।

শরীয়তপুর-২ আসনে সাবেক ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব) শওকত আলীর ছেলে ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী, শরীয়তপুর-৩ আসনে বাংলাদেশ
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর ব্যাপারী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম মনোনয়ন দৌড়ের তালিকায় রয়েছেন।

গাজীপুর

গাজীপুর জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে ২৬ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন ৫ জন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে এগিয়ে আছেন। এছাড়া গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল, কালিয়াকৈর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন শিকদার, ব্যবসায়ী নুরে আলম মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন।

গাজীপুর-২ (টঙ্গী-বোর্ড বাজার-পুবাইল) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন ৫ জন। বর্তমান সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে আছেন। তিনি দলের মনোনয়ন থেকে ছিটকে গেলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মনোনয়ন পেতে পারেন।

গাজীপুর-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ দলীয় মনোনয়নে এগিয়ে আছেন। তবে তিনি যদি মনোনয়ন না পান তাহলে দলের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামিল হাসান দুর্জয় ও তার ছোট বোন সংরক্ষিত আসন-৩১৪ এর সংসদ সদস্য রুমানা আলী মনোনয়ন পেতে পারেন বলে মনে করছেন স্থানীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

গাজীপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন দুইজন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে, বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি এবং কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদ। তবে সিমিন হোসেন রিমি পুনরায় দলের মনোনয়ন পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

গাজীপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন ৮ জন প্রার্থী। এ আসনে বর্তমানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি
ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি। এছাড়া গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুউজ্জামান, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশরাফী মেহেদী হাসান, গাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রফিজ উদ্দিনসহ অনেকেই মনোনয়ন চেয়েছেন। তবে মেহের আফরোজ চুমকিই পুনরায় দলের মনোনয়ন পেতে পারেন বলে ধারণা করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের ৩১ জন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে (রূপগঞ্জ) রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এগিয়ে রয়েছেন। তিনি এই আসন থেকে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তবে আরও দুইজন মনোনয়ন ফরম জমা দিলেও তারা শক্ত প্রার্থী নন।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়নের দৌড়ে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু। ২০০৮ সালে দলের টিকিটে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও দল তাকেই বেছে নেয়। এবার এই আসনে আরও পাঁচজন নৌকার মাঝি হতে চাইলেও দল নজরুল ইসলাম বাবুকেই বেছে নেবে বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আশা করছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত এগিয়ে রয়েছেন। আসনটিতে মোট ১৪ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও আলোচনায় রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম। এই আসনটি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে মহাজোট মনোনীত জাতীয় পার্টির দখলে রয়েছে। ফলে নেতাকর্মীরা এবার যেকোনো মূল্যে সেখানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর দাবি তুলেছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) আসনে তিনবারের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। প্রভাবশালী এই সংসদ সদস্য এবারও এগিয়ে আছেন। দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তার
গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ টানা চতুর্থবারের মতো ওই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেও শেষমেশ নৌকা উঠবে শামীম ওসমানের হাতে, এমনটাই ধারণা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।

নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে মনোনয়নের লড়াই হতে পারে সমানে সমান। এই আসনে ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে আলোচনায় আছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপুর নাম। টানা তিন মেয়াদে এই আসনে মহাজোট মনোনীত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রয়েছেন। ফলে এবারের নির্বাচনে নেতাকর্মীরা আসনটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর দাবি তুলেছেন।

মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জ জেলার তিনটি আসনে নৌকার মাঝি হতে চান ৩৭ জন। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ-১(সিরাজদিখান ও শ্রীনগর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ১৫ জন, মুন্সীগঞ্জ-২ আসন থেকে ১১ জন এবংমুন্সীগঞ্জ-৩ আসন চেয়েছেন ১১ জন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জের ৩টি আসনের মধ্যে দুইটি আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রার্থীরা অপরিবর্তিত থাকছেন। একটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে। এই আসনটিতে বর্তমানে আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী বিকল্পধারার প্রার্থী সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরীসহ আরো অনেকেই মনোনয়ন চাইছেন। যদি জোট হয় তাহলে এই আসনে বিকল্পধারার সংসদ সদস্য মনোনয়ন পাবেন। তবে জোট না হলে এই আসনে আওয়ামী লীগ কাকে দলের মনোনয়ন দেবে তা কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছে না।

মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। তিনি মনোনয়ন না পেলে টংগিবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কাজী আব্দুল ওয়াহিদের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস দলীয় মনোনয়ন পওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। এছাড়া নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাও মনোনয়ন দৌড়ে বেশ এগিয়ে রয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আপনার মতামত জানান