জনপ্রতিনিধির মাদকের তাঁবু পুড়িয়ে দিল গ্রামবাসী

প্রকাশিত

লাধুরচর গ্রামের পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার প্রস্থ ও ৫ কিমি দৈর্ঘ্যের জনমানব বিহীন ফসলি বিল (হাওর)। দিনের বেলায়ও কৃষকেরা দল বেঁধে নিজের জমিতে চাষ করতে যায়। নোয়াগাঁও, বারদী ও সনমান্দী ইউনিয়ন বেষ্টিত এ বিলে ভয়ে কেউ একা যায় না। গ্রাম থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন ছোট একটি তাঁবু তুলে মাদক বিক্রি ও জুয়ার আসরে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রায় তিন বছর ধরে। গ্রামবাসীরা ভয়ে বাধা দিতে আসে না। গ্রামের যুবক ছেলেদের মরণনেশা মাদক থেকে রক্ষা করতে গ্রামবাসী গতকাল একত্রিত হয়ে মাদকের তাঁবু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের লাধুরচর গ্রামের। জানা যায়, লাধুরচর গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আনোয়ার হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ানউদ্দিন চুন্নর দুই ছেলে রুমি ও মিঠুর নেতৃত্বে ২০ জনের একটি অস্ত্রধারী বাহিনী গত তিনবছর ধরে জোড় করে কৃষকের ফসলি ও সরকারি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। সন্ধ্যার পর বিলের তাবুতে মাদক বিক্রি ও জুয়ার আড্ডা বসায়। বিলের মাঝে হওয়ায় এবং ব্যবসায়ীরা অস্ত্রধারী ও প্রভাবশালী নেতার বাহিনী হওয়ায় ভয়ে কেউ বাধা দিতে সাহস পায় না। এরই মধ্যে মাটি কাটার অভিযোগে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও থামেনি তাদের মাটিলুট ও মাদক ব্যবসা।

এলাকাবাসী জানায়, করোনাভাইরাসের আঘাতে সারাবিশ্ব যখন নিশ্চুপ ঘরবন্দি তখন ট্টাকের আওয়াজ ও ধুলিঝরে আক্রান্ত পুরো গ্রামবাসী। গতকাল সোমবার বিকেলে গ্রামের শতশত নারী-পুরুষ মাটিলুট, মাদক ও জুয়ার আসরের প্রতিবাদে বিলে নেমে আসে। এ সময় মাদকব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভেকু রেখে তাবুতে গিয়ে সংগঠিত হতে থাকে।

খবর পেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম ও সহকারী কমিশানার (ভূমি) আল মামুন এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান মাটিকাটা, মাদক ও জুয়ার আসর স্থায়ীভাবে বন্ধ করার ঘোষণা দিলে এলাকাবাসী শান্ত হয়। প্রশাসনের খবর পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাবু রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় প্রশাসনের উপস্থিতিতে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের তাবু পুড়িয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে ইউএনও সাইদুল ইসলাম জানান, মাদক বিক্রি ও জুয়ার আসরের মূলহোতা এক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের নেতৃত্বে তার বাহিনী ওই এলাকায় সাধারণ কৃষকদের কৃষিজমির মাটি জোরপূর্বক অবৈধভাবে কেটে নিয়ে বিক্রি সহ মাদক ব্যবসা ও জুয়ার আসর বসিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। আমরা একটি ভেকু জব্দ করেছি খবর পেয়ে অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করতে পারিনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুত্র : কালের কন্ঠ

আপনার মতামত জানান