‘কাঁচা বাদাম’ বিক্রেতা ভুবনের অজানা তথ্য

প্রকাশিত

‘হাতের বালা, পায়ের নুপুর, সিটি গোল্ডের চেন
দিয়ে যাবেন। আজি সমান সমান বাদাম পাবেন

বাদাম বাদাম দাদা বাদাম বাদাম,
আমার কাছে নাই গো বুবু ভাজা বাদাম।
আমার কাছে আছে শুধু কাঁচা বাদাম।
কাঁ……চা বাদাম… ‘

ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ প্রায় সবকয়টি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বুঁদ হয়ে আছে ‘কাঁচা বাদাম’ গানের সুরে। অথচ এই গানের রচিয়তা কি কখনো ভেবেছিলেন তার সুরে মাতোয়ারা হবে বাঙালিরা? ইউটিউব থেকে টুইটার, ফেসবুক থেকে টিকটক সব জায়গায় নজর কাড়ছে ভুবনের ‘কাঁচা বাদাম’ গানটি। ইতোমধ্যেই কোটি কোটি মানুষ দেখেছেন গানটি।

ভাইরাল এই গানটি যার কণ্ঠে গাওয়া হয়েছে সম্প্রতি তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। তার নাম ভুবনবাবু। তিনি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম কুড়ালজুড়ির গ্রামের বাসিন্দা।

আক্ষরিক অর্থে ‘কাঁচা বাদাম’ কোনো গান নয়। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে এক বাদামওয়ালার মুখে মুখে বানানো কথা। তিনি তার কথার ছন্দে ছন্দে বিভিন্ন জিনিসপত্রের বিনিময়ে কাঁচা বাদাম লেনদেনের কথা বলেন।

বাদাম বিক্রি করে প্রতিদিন ২০০-২৫০ টাকা উপার্জন হয় হয় ভুবনের। ত্রিপল দেওয়া তার মাটির বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যা। ভুবনের এই গানের সুরের টানে ছুটে আসেন অনেকে। শুধু গান শোনা নয়, গানের পাশাপাশি তার কাছে ক্রেতারা বাদামও কেনেন।

শুধু টাকা দিয়ে নয়, পুরনো সিটি গোল্ডের চেন, চুড়ি, হাতের বালা, ভাঙা মোবাইল, হাঁসের পালক, মাথার চুল ইত্যাদির বিনিময়েও বাদাম কেনা যায় তার কাছ থেকে। মূলত তিনি বিভিন্ন বাড়ি থেকে মোবাইলের কেসিং বা সিটি গোল্ড এর পুরাতন গহনার পরিবর্তে টাকা অথবা কাঁচা বাদাম বিনিময় করেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে রাতারাতি সেলিব্রিটি হয়ে যাওয়া ভুবন ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন ইতোমধ্যে। সেখানে তিনি বলেন, ‘‌মোবাইলে আমার গান দেখছে সবাই। দেখা হলেই সবাই এসে আমার গানের প্রশংসা করে যাচ্ছে। ভালোই লাগছে। গানটি আমিই লিখেছি, আমারই তৈরি। আমারই সুর, আমারই গলা। চিন্তাভাবনা করতে করতেই করেছি।

বিগত ১০ বছর ধরে বাদাম বিক্রি করছি। আমি বাদাম বিক্রি করতে গিয়ে এই গান করি। সেই সময় কোনও একটি ছেলে সেই গান ক্যামেরা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু আমি সেই ছেলেটিকে চিনি না।’‌

ভুবন বলেন, আগে সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাদাম বিক্রি করতাম। আজকাল মোটরবাইকে চড়ে বিক্রি করি। ১৫ হাজার টাকা জোগাড় করে পুরনো একটা বাইক কিনেছি।

স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াহিদ রাজা খান বলেন, ‘‌পুরো বিশ্বে ভুবন বাদ্যকরের গান ছড়িয়ে যাচ্ছে। মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেটে তার গান শুনছেন। এমনকি বাংলাদেশের টিকটিক স্টাররা তার গান লিপ সিঙ্কিং করে ভাইরাল করছেন। এতে আমরা খুবই গর্বিত।’‌

আপনার মতামত জানান