‘আ’লীগ উইল বি কাম ব্যাক’ বলাতে ইউএনওকে বদলী

প্রকাশিত




নিজস্ব প্রতিনিধি
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মামুনের সাম্প্রতিক ঘটনাটি বাংলাদেশে বাক স্বাধীনতার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা উস্কে দিয়েছে।

আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের নির্দেশে তাঁকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়। অভিযোগ উঠেছে যে ইউএনও আল মামুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ উইল বি কাম ব্যাক, টুডে অর টুমোরো’ (আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে, আজ অথবা আগামীকাল)।

জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় এই ঘটনা আলোচিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্যা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান অভিযোগ করেন যে, ইউএনও তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে ডেকে এই মন্তব্য করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে ইউএনও আল মামুনকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন এবং পরবর্তীতে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘোষণা দেন।

তবে ইউএনও আল মামুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি এমন কোনো কথাই বলিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সেই পরিবেশে ওই ধরনের কথা বলা অসম্ভব।’

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশে বাক স্বাধীনতা ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। সরকারী কর্মকর্তারা যদি কোনো বিষয়ে মতামত প্রদান করেন, তাঁদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বা পেশাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়।

এই ঘটনার মাধ্যমে প্রশ্ন ওঠে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারি কর্মকর্তাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটুকু রয়েছে? এবং এ ধরনের ব্যবস্থা বাক স্বাধীনতা ও সুষ্ঠু প্রশাসনিক পরিবেশে কী প্রভাব ফেলতে পারে?

ফরিদপুরের এই ঘটনা কেবল একটি উদাহরণ। বাক স্বাধীনতার এমন পরিস্থিতি দেশের প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করতে পারে। এই ঘটনাগুলি আরও বৃহৎ প্রেক্ষাপটে মূল্যায়ন করা উচিত। গণতান্ত্রিক পরিবেশে মতামত প্রকাশের অধিকার সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই বিষয়ে স্বচ্ছ ও ন্যায্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

আপনার মতামত জানান