আমি আমার মন মতো এবাদত করেছি : শামীম ওসমান

প্রকাশিত



আঞ্চলিক প্রতিনিধি, সোনারগাঁ:
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, অনেকে ভাবছে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এবার বাংলাদেশের মানুষকে না খাইয়ে মারার ষড়যন্ত্র হবে। পৃথিবীর বড় বড় শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ, ইসরায়েলের গাজায় হামলা। এগুলোর কারণে টাকা থাকার পরেও খাবার পাওয়া যাচ্ছে না।
আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নম পার্কে ফতুল্লায় নির্বাচনী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

শামীম ওসমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ছয়মাস আগে থেকে বলেছেন এক ইঞ্চি জায়গাও ফেলে রাখবেন না। তিনি জানেন ক্রাইসিস আসছে।


এই ক্রাইসিসে আমাদের ৭৪ সালে ফেলা হয়েছিল। খাদ্যভর্তি জাহাজ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের রেজাল্ট শিট আমার হাতে এসেছে। আমাদের কম করে হলেও ২৫ থেকে ৩০ হাজার ভোট নষ্ট করা হয়েছে।

অনেকে এসেছে কিন্তু ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। আমি কোনো কেন্দ্রে যাইনি। সারাদিন কবরস্থানে আমার বাবা-মা, দাদা ও ভাইয়ের কবরের সামনে ছিলাম। আমি আমার মন মতো এবাদত করেছি। ভোট দিয়ে সোজা রাইফেল ক্লাবে চলে গিয়েছি।

আমি রেজাল্ট শিট এনালাইসিস করছি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি পাঁচ বছর পর বেঁচে থাকলেও নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা নেই। আমার নেত্রী যা বলবেন তার বাইরে আমি কিছু করতে পারব না। ভৌগলিকভাবে অনেক কিছু ঘটছে। মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা আমাদের বর্ডারে যেখান দিয়ে রোহিঙ্গা ঢুকে তা দখলে নিয়ে নিয়েছে। এরচেয়ে বেশি খোলামেলা ভাবে বলতে পারব না। আমরা একটা ক্রাইসিসে পড়তে যাচ্ছি। যা হবে দেখা যাবে। আমরা হারব না। আমাদের শেখ হাসিনার ওপর ভরসা আছে।’

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি নির্বাচন নিয়ে কোনো অফিসারের সঙ্গে কথা বলিনি। আমি বলেছিলাম ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন করব। এই নির্বাচনে আমার ভোট কমাতে চেষ্টা করা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জে আমাদের বিপুল সংখ্যক মহিলা ভোটারের ভোট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তো সবার কাছেই মোবাইল ফোন থাকে। বলা হলো ফোন নিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। জেলা প্রশাসক পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারকে জানাই। কারা দিচ্ছে না? কিছু জায়গায় পুলিশ, কিছু জায়গায় জুডিশিয়াল টিম।’

অনেক জায়গায় বলা হয়েছে তিন লাখ টাকা দিন, নয়ত ভোট স্লো হয়ে যাবে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি তিন টাকাও দেইনি। সেকারণে আমার আট পার্সেন্ট ভোট কম হয়েছে। রাজনীতিতে ধান্ধা করতে আসিনি। ধান্ধা করলে ২০২৩ সালে বাড়ি বন্ধক রাখতে হত না। কোনো খারাপ লোককে আমি আমার সাথে রাখব না। সে যেই হোক। আমি আপনাদের কাছে ঋণী হয়ে আছি।’

তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে এমন কোন এলাকা নেই যেখানে মাদক বিক্রি হয় না। মাদক থেকে আসে সন্ত্রাস, কিশোরগ্যাং। গতকাল মাসদাইর একজনের মাথায় কোপ দিয়েছে কিশোরগ্যাং। সেখানে আমাদের এত বড় বড় নেতা থাকা সত্বেও। তারা তো সেলার। ডিলার কে, হয়ত আমার সাথে বসে আছে। আমার ত্যাগী নেতাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সামনে চলে আসে। আমার জন্য দোয়া করবেন, আমাকে একটু সাহায্য করুন। আমি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, হেফাজত, জাতীয় পার্টি বুঝি না।’

আমরা সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে একটি সংগঠন করছি উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রত্যাশা নিয়ে এই সংগঠনের নাম হবে প্রত্যাশা। আপনারা শুধু মানুষকে নিয়ে আসবেন। মানুষ আসবে আপনারা ফরম ফিলআপ করে দিবেন। ক্ষমতায় কুলালে ঔষধও কিনে দেব। অনেকের টাকার অভাবে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করবো তার লেখাপড়া চালু রাখার।’

তিনি আরো বলেন, ‘আপনার এলাকার ভালো মানুষগুলোকে নিয়ে আসবেন। ইমাম, শিক্ষকদের নিয় আসবেন৷ অন্য দল করে করুক৷ সবাইকে ২৭ তারিখ একেএম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে নিয়ে আসবেন। পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব না মাদক নিয়ন্ত্রণ করা।’

আপনার মতামত জানান