আমরা আরো কঠোর হবো : জেলা প্রশাসক

প্রকাশিত

নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা চারশ ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা ৩০জন। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর ও আক্রান্তের সংখ্যা। নারায়ণগঞ্জকে এখন করোনা সংক্রমনের কেন্দ্রস্থল (এপিসেন্টার) বলছে দেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। ছড়িয়ে পড়েছে তা কমিউনিটি লেভেলে। গত ৭ এপ্রিল রাতে সরকারিভাবে নারায়ণগঞ্জকে লকডাউন করার ঘোষণা আসে। কিন্তু এখনো মানা হচ্ছেনা লকডাউনের বিধি নিষেধ। নারায়ণগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ও জেলার করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন কর্মকর্তা। তাদের সংস্পর্শে থাকায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন। রোববার (১৯ এপ্রিল) হোম কোয়ারেন্টিন থেকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন ঢাকার এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে। কি বলেছেন জেলা প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকর্তা। প্রেস নারায়ণগঞ্জের পাঠকের জন্য তা তুলে ধরা হল।

প্রশ্ন: লকডাউন ঘোষণার পরেও মানুষ লকডাউন মানছে না এবং সামাজিক দূরত্বও নিশ্চিত হচ্ছে না এর কারণ হিসেবে আপনি কি মনে করেন?

জেলা প্রশাসক: আমর সর্বোচ্চ চেষ্ট করে যাচ্ছি। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ অনেক জনবহুল। আমরা আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করছি যাতে করে মানুষ ঘরে থাকে। ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাই দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে । আমরা ডোর টু ডোর চেষ্টা করছি নমুনা সংগ্রহ করতে । কিন্তু অনেকেই জেলা ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে বা যাওয়ার চেষ্ট করছে। আমরা চেষ্টা করছি তাদের জেলার মধ্যে রাখতে।

প্রশ্ন: প্রশাসনের এত কড়াকড়ির মাঝেও তারা বাইরে যাচ্ছে, অন্যান্য জেলাগুলো সংক্রমিত করে ফেলছে আপনারা আরেকটু কঠোর হচ্ছেন না কী কারণে?

জেলা প্রশাসক: আমরা কঠোর অবস্থানেই রয়েছি। যারা জেলার বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছে আমরা তাদেরকে ঘরে নেওয়ার চেষ্টা করছি। একটা মানুষকে তো আর করোনা সংক্রমণ রোধে মেরে ফেলাও যাবে না। আমাদের এমপি মহোদয়, কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, মেম্বার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাই মিলে কাজ করছে জনগণকে ঘরে রাখতে। নৌপথেও আমরা কড়াকড়ি আরোপ করেছি যাতে করে কেউ কোথাও না যেতে পারে।
আমি সবাইকে বলবো আপনারা ঘরে থাকুন। অপ্রেয়োজনে বের হবেন না। আমরা যদি আইইডিসিআরের নির্দেশনা মেনে চলি তবে খুব শীঘ্রই আমরা এর থেকে মুক্তি পাবো। অনেকেই দেখা যাচ্ছে ভয় পাচ্ছে। আকঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হতে হবে।

৩০০ শয্যা হাসপাতালে করোনা ইউনিট পুরোপুরিভাবে এখনও চালু না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, নাহ। ইউনিট চালু হয়েছে। এবং সেখানে রোগীও রয়েছে। আমরা সেখানের একটি অংশে ল্যাবও প্রস্তুত করছি।

প্রশ্ন: আপনারা যারা লিড করছেন যারা প্রথম শ্রেণীর যোদ্ধারা রয়েছেন আপনি, আপনার সহকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী তাদের সুরক্ষায় কি ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন?

জেলা প্রশাসক: আমি শুধু সহকর্মী নয় স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, র‍্যাব, সংবাদকর্মী সবাইকেই প্রথম থেকেই বলে আসছি, নিজেদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সবসময় নিশ্চিতের জন্য। যেমন, বার বার হাত ধোয়া, গ্লাভস, মাস্ক ইত্যাদি পরিধান করা।

প্রশ্ন: প্রশাসনের কড়াকড়ির পরেও অনেকে চাতুরী করে অ্যাম্বুলেন্স বা অন্যান্য পন্থায় জেলা ছাড়ছেন এই্ বিষয়টি আপনি কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?

জেলা প্রশাসক: এই বিষয়টি আমাদের জন্য একটু কঠিন। এর কারন হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটরা বলছেন, তারা আসলে এমন পরিচয় বা এমনসব পন্থা অবলম্বন করে সেই হিসেবে বিষয়টি একটু কঠিন। তবে এই বিষয়টি নিয়ে আমরা আরো কঠিন হবো। কেননা এই বিষয়টি নিয়ে কঠোর হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। বিভিন্ন প্রচারণার মাধ্যমে তাদের সচেতন করবার পরেও তাদের যে এমনি এমনি ঘর থেকে বের হওয়ার যে অভ্যাস ছিলো সেই অভ্যাসটি যাচ্ছে না।

সুত্র : প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

আপনার মতামত জানান