আবুবকরের ব্রাজিল বধ

প্রকাশিত



বদলে যাওয়া একাদশেও বেসুরো হয়নি ব্রাজিলের খেলা। ক্যামেরুনের বিপক্ষে অ্যান্থনি-রোদ্রিগো-মর্তিনেল্লির পায়ের ঝলক মুগ্ধতা ছড়ালেও শেষটা মোটেও মনে রাখার মতো হয়নি; বরং ভিনসেন্ট আবুবকরের কীর্তিতেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই ম্যাচ। অতিরিক্ত সময়ে ক্যামেরুনের এই ফরোয়ার্ডের গোলে থেমে যায় লুসাইলে হলুদের ঢেউ।

নিয়মিত একাদশের দুজন ছাড়া বাকিরা আসেন বেঞ্চ থেকে।

বেঞ্চের দলেও যে ব্রাজিলীয় সৌরভ আছে, সেটা বোঝাতে মাত্র ২ মিনিট সময় নেন অ্যান্থনি। এই উইঙ্গারের দুই পায়র জাদুই মোহ ছড়িয়ে যায় লুসাইল স্টেডিয়ামে। মার্কারকে ছিটকে বাইলাইন থেকে কাটব্যাক করে পোস্টের সামনে ঠেলেও সতীর্থ কাউকে পাননি। তাঁর পায়ে আবার ৬ মিনিটেও আরেক দফা ম্যাজিক হয়। এরপর লেফট উইংয়ে খেলা মার্তিনেল্লির পালা। ১৪ মিনিটে ফ্রেদের হাওয়ায় ভাসানো বলে তাঁর দুর্দান্ত হেড চমত্কার সেভ করেন ক্যামেরুনের গোলরক্ষক ডেভিস ইপাসি। বাঁ-দিক থেকে ঢুকে তিনি দারুন ক্রস বাড়ালেও গ্যাব্রিয়েল জেসুসের অক্ষমতায় মেলেনি গোলের দেখা। নাম্বার টেনে খেলা রোদ্রিগো জেগেছেন একটু দেরিতে। ২৮ মিনিটে মার্কারকে পেছনে ফেলে ছুটছিলেন ক্যামেরুনের দিকে। কুন্দের ফাউলে সেই চেষ্টা বিফলে যায়। এর পরই আরেকটি মুভে তিনি আটকা পড়েন আরেক ফাউলে। বিরতিতে যাওয়ার আগে মার্তিনেল্লি দুর্দান্ত শটে পরাস্ত করা যায়নি ক্যামেরুনের ওই গোলরক্ষককে। উল্টো এমবুমোর শট চমকে দিয়েছিল এদেরসনকে।

বিরতির পরও যথারীতি ব্রাজিলের আধিপত্যে ম্যাচ এগোয়। তবে অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলে। যেসব শট পোস্টে থেকেছে সেগুলো হার মেনেছে ইপাসির নৈপুণ্যের কাছে। তিনি প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ক্যামেরুনের পোস্টে। ৫৩ মিনিটে কাউন্টারে রোদ্রিগোর পাসে জেসুসের সামনে সুযোগ এলেও সেই প্রাচীর টপকাতে পারেননি। ৫৬ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে মার্তিনেল্লির শট অবিশ্বাস্য সেভ করেন তিনি। পরের মিনিটে মিলিতাওয়ের গড়ানো শটে শেষ মুহূর্তে হাত ছুঁইয়ে দেন। এর মধ্যে অনেক বদলি নামিয়েছেন তিতে। নামিয়েছেন তাঁর নিয়মিত একাদশের তারকাদেরও। কিন্তু তাঁরাও পারেননি ক্যামেরুনের গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে। ৮৪ মিনিটে রাফিনিয়ার কাটব্যাকে ফ্রেদের ফ্লিকটিও গেছে পোস্ট ঘেঁষে বাইরে।

এর পরই ম্যাচে দুর্দান্ত এক টুইস্ট! ৯২ মিনিটে কাউন্টারে এমবেকেলির দৌড়ের সঙ্গে পেরে ওঠেনি ব্রাজিল। তিনি বলটি এত চমত্কার সাজিয়ে দিয়েছেন, ভিনসেন্ট আবুবকরের ফিনিশ না করে উপায় ছিল না। এরপর গোলদাতা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মার্চিং অর্ডার পেয়েছেন। তাতে কিছু যায়-আসে না। ব্রাজিলকে হারিয়ে আবুবকরের ইতিহাস গড়েছেন। আর আফ্রিকান দলের কাছে এই প্রথম নুয়েছে ব্রাজিল। তবে এই জয়েও বিদায় নিতে হয়েছে ক্যামেরুনকে, হেরেও গ্রুপসেরা হয়ে শেষ ষোলেতে ব্রাজিল। সার্বিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়ে তাদের সঙ্গী হয়েছে সুইজারল্যান্ড।

আপনার মতামত জানান