আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এই হামলা হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত

সরকারের সহযোগিতা না থাকলে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মত ঘটনা ঘটতে পারত না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিএনপি-জামায়াত সরকারকে ওই হামলায় অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, যেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সাধারণত পুলিশ এগিয়ে আসে সাহায্য করতে, যারা আহত তাদেরকে রক্ষা করতে। এইখানে দেখা গেল উল্টো। বরং আমাদের নেতাকর্মী দূরে যারা ছিল, তারা যখন ছুটে আসছে, তাদেরকে আসতে দেওয়া হয়নি বরং টিয়ার গ্যাস মারা হয়েছে। ওই গ্যাসেও তো আরো অনেকে আরও অসুস্থ। তার মানেটা কী? যারা আক্রমণকারী, তাদেরকে রক্ষা করা, তাদেরকে রেসকিউ করার জন্যই এই টিয়ারগ্যাস মারা, লাঠিচার্জ করা। একটা সরকারের যদি সহযোগিতা না থাকে, তাহলে এই রকম ঘটনা ঘটতে পারে না।

শনিবার ভয়াবহ সেই হামলার সপ্তদশ বার্ষিকীতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রায় গ্রেনেড হামলা হলে আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ নেতাকর্মী আহত হন।

আজকের প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা সেদিন প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়।

বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতেই যে এই হামলা হয়েছিল এবং তাতে তখনকার ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোটের শীর্ষ নেতাদের যে প্রত্যক্ষ মদদ ছিল তা মামলার তদন্তে উঠে আসে।

ওই দিনের কথা স্মরণ করে আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার হামলার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জজ মিয়া নামের দরিদ্র একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ‘কাহিনী তৈরি করে’ তার পরিবারকে লালন পালন করা হবে এই আশ্বাস দিয়ে। অথচ আর্জেস গ্রেনেড সংগ্রহ করা বা গ্রেনেড মারার মত লোক সংগ্রহ করার সামর্থ্যই (সেই জজ মিয়ার) ছিল না। পাশপাশি ওই সময় মগবাজার আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেসকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করাসহ আওয়ামী লীগের কর্মীদের গ্রেপ্তার করে তাদের দিয়ে স্বীকার করানোর পরিকল্পনা হয়েছিল যে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন, একটা গ্রেনেড পাওয়া গেল জেলখানার ভেতরে, দেয়ালের সঙ্গে। সেটা আবার আমাদের কোন কোন স্বনামধন্য পত্রিকা ডায়াগ্রাম এঁকে দেখালো যে জেলখানার পাশের কোনো এক বাড়ি থেকে ওই গ্রেনেড ছুড়ে মারাতে ওটা ওখানে পড়েছে। জেলখানার পাশে এমন কোনো বাড়ি নেই যেখান থেকে গ্রেনেড মারলে ওই জায়গায় এসে গ্রেনেড পড়বে। আসল কথা হল এরা অনেকগুলো ক্রিমিনাল জোগাড় করেছিল। তারমধ্যে কিছু জেলখানা থেকে বের করে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু সেসময় প্রত্যেকের হাতে যে গ্রেনেডগুলো ছিল, সবাই সেগুলো মারতেও পারেনি।

তিনি বলেন, রমনা হোটেলের সামনে ওখানে একটা গলিতে একটা পড়ে পাওয়া যায়। এবং বিভিন্ন জায়গায় কয়েকটা আলামত পাওয়া যায়। পরে তারা নিশ্চয় (কারাগারে) ঢুকে গিয়েছিল এবং একজন কারারক্ষী এর মধ্যে জড়িত ছিল।

তখনকার সরকার এদের ‘রক্ষা করে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি’ করে দিয়েছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন জানল যে আমি মরি নাই, বেঁচে আছি। তখন তারা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।

সূত্রঃ যুগান্তর।

আপনার মতামত জানান