শিক্ষার্থীদের দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন!
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় শিক্ষার্থীদের দিয়ে চলতি এসএসসি পরীক্ষার খাতায় ওএমআর শীট পূরণ করার উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার কাঁচপুর সিনহা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি প্রধান শিক্ষক আশরাফ উল্লাহ তার বিদ্যালয়ে ৭ম ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থাদের দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার খাতার বিশেষ কোড পূরণ করাচ্ছেন। এ খবর অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবক, শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী জড়ো হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবীতে আন্দোলন ও মানব বন্ধন করেন।
জানা গেছে, চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা’ বিষয়ের কয়েক বান্ডেল খাতা মূল্যায়ন করছিলেন ওই বিদ্যালয়ের ৭ম ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তাদেরকে দিয়ে একটি বোর্ড পরীক্ষার খাতার উপরে থাকা ওএমআর শীটে যে সকল ঘর পূরণ করতে হয় সেই ঘরগুলো পূরণ করাচ্ছিলেন বিদ্যালয়টির সহকারি প্রধান শিক্ষক আশরাফ উল্লাহ।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আশরাফ উল্লাহ স্যার খাতার বৃত্তভরাট করার জন্য তাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
আরো জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা এক হাতে মোবাইলে ফেসবুক চালাচ্ছে এবং অন্য হাতে ওএমআর শীট পূরণ করছে। ফলে অমনোযোগী থাকার কারণে ভুলের সম্ভানা বেশী।
এ বিষয়ে ভিডিও ধারণকারী শিক্ষক জানান, একটি সামান্য ডিজিট পূরণে ভুল হলে একজন পরীক্ষার্থীর ফলাফল আটকে যেতে পারে। খবর পেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মাহাবুব পারভেজ ও আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছেন। বিষয়টি টের পেয়ে অভিযুক্ত আশরাফ খাতাগুলো সরিয়ে নিয়ে আলমারীতে তালাবদ্ধ করেন এবং অভিভাবক সদস্যদের সামনেই ভিডিও ধারণকারী শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন এবং তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
এ প্রসঙ্গে উক্ত স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলীম জানান, বিষয়টি আমাকে অভিভাবক সদস্য ও সহকারি শিক্ষকরা জানিয়েছে। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করব এবং একজন শিক্ষক হিসেবে তার কাছ থেকে আমরা এটা আশা করিনি।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম জানান, খাতা মূল্যায়ণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যাচাই-বাছাই করে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেন। এ ব্যাপারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছাড়া আমাদের কিছু করার এখতিয়ার নাই। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (ঢাকা) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আমিরুল ইসলাম কালের কন্ঠকে জানান, এটা মারাত্মক অপরাধ। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খাতা মূল্যায়নের সময় মাথা ঠাণ্ডা রাখা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করে একান্ত কক্ষে বসে কাজ করা। খাতা মূল্যায়নকারীর ভুলের কারণে অনেক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়ে আত্মহত্যা করার ঘটনাও ঘটেছে। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধ প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত জানান