সোনারগাঁয় ব্যবসায়ী সফিকুল হত্যা চেষ্টাকারী মামুন ডামি রোগী সেজে হাসপাতালে ভর্তি

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ >>
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সফিকুল ইসলাম নামের এক মুদি ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টাকারী মামুন অর রশীদ ওরফে দেওয়ান মামুন রোগী সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। ভর্তি হওয়ার পর থেকে তাকে হাসপাতালের বেডে দেখা যায়নি বলে জানান অন্যান্য রোগীরা।

এ ব্যাপারে কর্তব্যরত আবাসিক চিকিৎসক সজিব রায়হান জানার, বাম হাতে জখম দেখিয়ে হাসপাতালে আসে দেওয়ান মামুন। জরুরী বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশংকামুক্ত হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রোগী অধিকতর চিকিৎসার জন্য ভর্তি চাইলে তাকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকেই সে বাইরে বাইরে থাকে। রোগীকে বেডে না পেয়ে তার ভর্তি ফরমে ইংরেজীতে নট ফাউন্ড লিখে রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হালিমা সুলতানা হক জানান, কোন রোগী বেডে পাওয়া না গেলে পলাতক দেখিয়ে রিলিজ দিতে বাধ্য হই। মারামারি করে অনেকে ডামি রোগী সেজে হাসপাতালে ভর্তি হয়। যখন ভর্তি হতে আসে তখন এমন অবস্থা দেখায় শরীরের যে কোন জায়গায় স্পর্শ করলেই হাউমাউ কনে কেদে ওঠে।

হাসপাতালের ভর্তি রেজিষ্টারে দেখা যায়, দেওয়ান মামুন (৪৫) নামের রোগী ১১ আগষ্টে হাসপাতালে ভর্তি হন। তার ভর্তি রেজি নং-১৬৩১/১ এবং বেড নং পুরুষ-৮। চিকিৎকেরর নিয়মিত ভিজিট রেজিষ্টারে নট ফাউন্ড লেখা দেখা যায়।

এ ব্যাপারে চিকিৎসাধীন সফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগের দিন মামুন অর রশিদ ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমাকে হত্যাচেষ্টা করে। পরে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় হাসপাতাল মসজিদের সামনে আবার আক্রমন করে। সেখানেও সুবিধা করতে না পেরে সুযোগমত আক্রমন অথবা মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে ফাঁসাতেই সে হাসপাতালে রোগী সেজে আছে।

উল্লেখ্য যে, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের গঙ্গানগর গ্রামে সফিকুল ইসলাম মুদি দোকানের ব্যবসা করে। ১১ আগস্ট রাত প্রায় সাড়ে ১১টায় সে ঈদের বেচাকেনায় ব্যস্ত থাকা অবস্থায় প্রতিবেশী তমিজউদ্দিন দোকানে এসে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক করে। এ সময় পাশের বাড়ির সফিকুল ইসলাম মাস্টারের ঘরজামাই মামুন অর রশীদ সংঘবদ্ধ হয়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে দোকানদার সফিকুল ইসলামের মাথায় কোপাতে থাকে। বোমা ও বিস্ফোরক মামলার আসামি বিএনপি নেতা তমিজউদ্দিন ও তার সহযোগী নুরুল আমিন, আনিসুর রহমান টিপু, সাইদুর রহমান মাসুম, মামুনের স্ত্রী নূরজাহান, মামুন মিয়া, ওবায়দুর রহমান অপু, রেজাউল করিমসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দোকানীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এ অবস্থায় সফিকুলের চিৎকারে তার পাশের ফ্লেক্সিলোডের দোকানদার আল-আমিন এগিয়ে আসলে তাকেও নীলাফুলা জখম করে। পরে সকলে একতাবদ্ধ হয়ে মুদি ও ফ্লেক্সিলোডের দোকানে ভাঙচুর করে নগদ ২ লাখ টাকা ও ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আহতদের চিৎকারে গ্রামবাসী ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার সময় তারা আবারো সংঘবদ্ধ হয়ে হাসপাতাল মসজিদের সামনে হামলা চালায়। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে সফিকুলের স্ত্রী সাফিয়া বেগম বাদী হয়ে গতকাল সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

আপনার মতামত জানান