অগ্রিম টাকা দিয়ে টোকেন হাতে ঘোড়ার মাংসের কিনছে ক্রেতারা

প্রকাশিত

গাজীপুর প্রতিনিধি :

ফজরের পর থেকে লাইনে অপেক্ষা। অগ্রিম টাকা দিয়ে টোকেন হাতে অপেক্ষায় সবাই। গত শুক্রবার গাজীপুর মহানগরীর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের হায়দ্রাবাদের আততাকওয়া মসজিদসংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘ লাইনে এমন অপেক্ষা ছিল ঘোড়ার মাংস কিনতে। কেউ এসেছেন ‘দাম কম’ শুনে।


কেউ এসেছেন স্বাদ উপভোগ করতে। আবার কেউ এসেছেন ‘জীবনী শক্তি বৃদ্ধির ওষুধ’ ভেবে খাওয়ার জন্য। দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত ১২টি ঘোড়ার মাংস বিক্রি হয়। তখনও শতাধিক ক্রেতা মাংসের জন্য টাকা দিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন।

তিন মাস আগে ঘোড়ার মাংস বিক্রির প্রচলন শুরু করেন এলাকার দুই বন্ধু শফিকুল ইসলাম ও নুরুল্লাহ মামুন। দুবাই ভ্রমণে গিয়ে ঘোড়ার মাংস খেয়ে আকৃষ্ট হন তাঁরা। দেশে ফিরে নিজেরা খাওয়ার জন্য প্রথমে ঘোড়া কিনে এনে জবাই করে মাংস ভাগ করে নেন। জামালপুর, কুড়িগ্রাম এসব জেলা থেকে কিনে আনা হয় ঘোড়া।

চাহিদা বাড়ায় প্রতি শুক্রবার জবাই করতেন একটি ঘোড়া। পরে দুটি, তিনটি। দুই সপ্তাহ আগেও তিন-চারটি জবাই করে আড়াই শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতেন। এখন চাহিদা বেড়েছে আশাতীত। বাড়ানো হয়েছে দামও।
তার পরও অনেকে ১০-১২ কেজি কিম্বা তাঁর চাইতে বেশি মাংস কিনে নিচ্ছেন।
নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মণদি এলাকা থেকে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আগে কখনো ঘোড়ার মাংস খাইনি। শুনেছি মধ্যপ্রাচ্যে এটি জনপ্রিয়। দেশেই পাওয়া যায় শুনে সকাল ৮টার দিকে কিনতে এসেছি স্বাদ টেস্ট করব ভেবে। টাকা দিয়ে তিন ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি। এখনো মাংস হাতে পাইনি।’

টঙ্গীর এরশাদ নগর থেকে আসা আলেয়া খাতুন (৫০) বলেন, ‘এক কেজি গরুর মাংস ৮০০ টাকা। আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ। গরুর মাংস কিনে খেতে পারি না। সেই তুলনায় ঘোড়ার মাংসের দাম অনেক কম। শুনেছি স্বাদও গরুর মতোই। তাই কিনতে এসেছি।’

মাংস বিক্রেতা নূরুল্লাহ মামুন বলেন, ‘ভোর থেকে দূর-দূরান্ত এমনকি বাইরের জেলা থেকে লোকজন ঘোড়ার মাংসের জন্য এসেছেন। ভিড়ের কারণে টোকেন ও লাইনের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত ১৪টি ঘোড়া জবাই হয়েছে। এখনো অনেক লোক টাকা দিয়ে অপেক্ষা করছেন। ঘোড়ার মাংস হালাল না হারাম, এই নিয়ে মানুষের মধ্যে মতভেদ থাকায় শুরুতে চাহিদা কম ছিল। এখন সবাই জেনে গেছে ধর্মীয় দৃষ্টিতে ঘোড়ার মাংস খেতে সমস্যা নেই। চাহিদার কারণে আজ শনিবারের জন্য কিছু টোকেন অগ্রিম দেওয়া হয়েছে।’

আপনার মতামত জানান