আওয়ামীলীগকে ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে রক্ষা করুন-টিপু
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি থেকে আহসান হাবীব টিপুকে বাদ দিয়ে রাজনীতির বাইরের ও আওয়ামী বিরোধীদের রহস্যজনক ভাবে দলে অন্তভুক্ত করায় চারিদিকে আলোচনা, সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ৬৬ সালের ৬ দফা থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যিনি আওয়ামীলীগের আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন সাহসী যোদ্ধা। মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই ভূঁইয়ার উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত, মার্জিত, কর্মীবান্ধব অন্তঃপ্রান আওয়ামী কর্মী আহসান হাবিব টিপু।
তার বাবা প্রয়াত আব্দুল হাই ভূঁইয়া ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ও আদর্শে ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। বি, কম পাশ করে তিনি তৎকালীন পিএইএ তে কর্মজীবন শুরু করেন। যোগদানের পর থেকেই বেতনের একটি অংশ দলের উউন্নয়ন ফান্ডে দিতেন। বঙ্গবন্ধু যে কয়বার সোনারগাঁয়ে এসেছেন ততোবারই তিনি সাথে বঙ্গবন্ধুর খেদমতে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন কর্মীও ছিলেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল হাই ভূঁইয়া জীবনবাজি রেখে সম্মুখসমরে যুদ্ধ করেছেন। মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে তিনি এবং তার সঙ্গে থাকা মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা স্বাধীনতার জন্য বীর বিক্রমে শত্রুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে বিজয়ের পতাকা হাতে বীর বিক্রমে সোনারগাঁয়ে ফিরে আসেন। এরপর তিনি স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করেন। বাকিটা গৌরবোজ্জ্বল বর্ণাঢ্য ইতিহাস।
দেশ স্বাধীনের পর তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে আবারো কর্ম জীবন শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে পরিচিত ৬৬ ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে তার সক্রিয় নেতৃত্বের কারনে ১৯৭৫ সালে জানির জনককে সপরিবারে হত্যার পর তিনি দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে ওমান এয়ার লাইনসে চাকুরীতে যোগদান করেন। ওমান থেকেই জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
১৯৮১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে উনি দেশে ফিরে আসেন এবং এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তখন আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন মরহুম আব্দুল হাসানাত সাহেব। ২০১৩ সালের ৩০ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এরপর ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও ৯৬ তে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি জামাত সরকারের নির্যাতনের স্টিমরোলার উপেক্ষা করে সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের আন্দোলননে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।
পরিশেষে বলব হাসনাত পরিবার ও আব্দুল হাই ভূঁইয়া পরিবার যদি আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে নৌকার হাল শক্তভাবে না ধরত তাহলে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের চিহ্ন পর্যন্ত থাকত না। আজ আওয়ামী লীগের কমিটিতে সেই মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই সাহেবের সুযোগ্য সন্তান রাজনীতির মাঠে সক্রিয় কর্মী আহসান হাবিব টিপুর নাম যদি বাদ দিয়ে অন্যদলের লোকজন সম্পাদকীয় পদ পায়। এটা কি আওয়ামী লীগ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র নয়।
আওয়ামী নেতা আহসান হাবিব টিপু বলেন, আমার বাবা ৬০ এর দশক থেকে বঙ্গবন্ধু নির্দেশনায় আমৃত্যু দলের জন্য ত্যা শিকার করেছেন। পারিবারিকভাবে আমরাও নানা সময়ে হামলা মামলা, নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমার বাবা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে অথচ সেই দেশ ও সেই দলে আমার ঠাই হয় না। ঠাই হয় জামাত বিএনপি ঘেষা নেতাকর্মীদের। আমি মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, আমার কি অপরাধে আমাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হল। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি এ কারনে নাকি আমার বাবা ৬০ দশক থেকে আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে শত নির্যাতন সহ্য করে আমৃত্যু দলের কল্যানে কাজ করেছেন এজন্য নাকি আমার বাবা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছে এজন্য। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির কাছে রহস্যজনক কারনে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ সোনারগাঁয়ের রাজপথের কর্মীদের দুরে ঠেলে দিবে এইটা আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগকে ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে রক্ষা করুন, শুধু এই অনুরোধ করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সহসভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বলেন, হাসনাত পরিবার ও ভূঁইয়া পরিবার সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের ধারক বাহক, তার নাম কি কারনে বাতিল করা হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। তারা নজিরবিহীন ভাবে আমাদের প্রস্তাবিত কমিটি থেকে আমাদের না জানিয়ে ১৯ জনের নাম বিয়োজন করে তাদের পছন্দের ১৯ জনের নাম সংযোজন করেছে। যাদের অনেককে আমরা কখনো দেখিনি, চিনিও না। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগকে চিরতরে ধ্বংস করার নীল নকশামাত্র। আমরা এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছি।
আপনার মতামত জানান