সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগে জাবির ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের অতিথি কক্ষে সাংবাদিক নির্যাতনের দায়ে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার দুপুরে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, “তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশে মূল অভিযুক্ত আসাদুল হককে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আসাদুলকে সহায়তা করার দায়ে আরো ১০ জনকে ছয় মাসের ‘স্থগিত’ বহিষ্কার ও দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। ”
আসাদুল হক নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। অন্য বহিষ্কৃতরা হলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের আরিফুজ্জামান সেজান, ৪৭তম ব্যাচের রায়হান হাবীব, আইন ও বিচার বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, অর্থনীতি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের মির্জা শাহনূর উল হক, দর্শন বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের মীর হাসিবুল হাসান, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের মুনতাসির আহম্মেদ, রসায়ন বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের জাহিদ নজরুল, বাংলা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের ইমরান বশর, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের জায়েদ-বিন-মেহেদী, প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের নাফিস হোসেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘স্থগিত বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা যদি ছয় মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য কোনো অপরাধ করে, তাহলে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে তাত্ক্ষণিক বহিষ্কার করতে পারবে। এ জন্য শৃঙ্খলা কমিটি ও সিন্ডিকেটের সুপারিশের প্রয়োজন পড়বে না। ’
গত ২ আগস্ট মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের অতিথি কক্ষে ডেকে নিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিককে মারধর করেন বহিষ্কৃতরা। ওই রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আট কর্মীকে শনাক্ত করে দলীয় কার্যক্রম থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন।
পরদিন ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে হল প্রশাসন। গত ২১ আগস্ট কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। গত ১ সেপ্টেম্বর শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ঘটনার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আপনার মতামত জানান