ময়মনসিংহের ২৮ ইউনিয়নে ১৮ টিতে নৌকার পরাজয়
দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলবাড়িয়া উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জয়ের ধারায় পিছিয়ে পড়েছেন। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ১০ জন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও সংগঠনটির ১১ জন নেতাকর্মী স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি নির্বাচিত সাত জন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে রয়েছেন- ধোবাউড়া সদর ইউনিয়ন থেকে নজরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট উপজেলার ভুবনকুড়া ইউনিয়ন থেকেএম সুরুজ মিয়া, জুগলি ইউনিয়নে তামাদুল হক, গাজিরভিটা ইউনিয়নে আব্দুল মান্নান, ধারা ইউনিয়নে তোফায়েল আহমেদ বিপ্লব ও ধুরাইল ইউনিয়ন এর ওয়ারিস উদ্দিন সুমন, ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেওখোলা ইউনিয়নে তাজুল ইসলাম বাবলু, এনায়েতপুর ইউনিয়নে বুলবুল হোসেন, রাধাকানাই গোলাম কিবরিয়া ভবানীপুর ইউনিয়নে জবান আলী।
চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন- ধোবাউড়া উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়ন থেকে হুমায়ুন কবীর সরকার, পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়ন থেকে মনজুরুল হক ও গোয়াতলা ইউনিয়ন থেকে জাকিরুল ইসলাম টুটন, হালুয়াঘাট উপজেলার বিলডোরা ইউনিয়ন থেকে সাবজাল হোসেন খান, শাকুয়াই ইউনিয়নে ইঞ্জিনিয়ার ইউনুস আলী ও আমতৈল ইউনিয়ন থেকে শফিকুর রহমান, ফুলবাড়িয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়ন থেকে সাইদুর রহমান রয়েল, বালিয়ান ইউনিয়নে ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান, বাক্তা ইউনিয়নে ফজলুল হক, রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নে মুক্তার চৌধুরী ও আসিম ইউনিয়ন থেকে ইমরুল ফয়েজ।
এদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতরা হলেন- ধোবাউড়া উপজেলার গামারীতলা ইউনিয়ন থেকে আনোয়ার হোসেন, ঘোষগাঁও ইউনিয়নে হারুনুর রশিদ, হালুয়াঘাট উপজেলার নড়াইল ইউনিয়ন থেকে আনোয়ার হোসেন, স্বদেশী ইউনিয়ন থেকে রিয়াদ সিদ্দিকী ইরান, ফুলবাড়িয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়ন থেকে মোজাম্মেল হক, ফুলবাড়িয়া সদর ইউনিয়ন থেকে জয়নাল আবেদীন বাদল ও কালাদহ ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম মাস্টার।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরাজয়ের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী আজাদ জাহান শামীম জানান, গত ১৯ বছর ধরে জেলার বেশিরভাগ ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠিত হয়নি। এ কারণে তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাদের মতামতের মূল্যায়নও হয়নি। এ কারণে অধিকাংশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী একসঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় নৌকার ভোট ভাগ হয়ে যায়। এতে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
এদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও অনেক বিএনপি দলীয় নেতা-কর্মী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহাব আকন্দ বলেন, চলামান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির কোনও অনুমোদন ছিল না। এরপরও বিএনপির অনেক নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেছেন। এতেই বোঝা যায় বিএনপি জনগণের কাছে একটি জনপ্রিয় দল।
আপনার মতামত জানান