এবার নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের সহিসংতা মামলায় আরও তিন দিনের রিমান্ডে মামুনুল হক

প্রকাশিত

গত ২৮ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সহিসংতা ও গাড়ির পোড়ানোর মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে আরও তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার দুপুরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এ বিষয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, মামুনুল হককে নাশকতার একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে মামুনুল হকের কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার করা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণের মামলায় হেফাজত নেতা মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড; সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় তিন দিন; সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিন দিনসহ মোট ৯ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেলা পুলিশ। এ ছাড়া ২৮ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে সিদ্ধিরগঞ্জের সহিসংতা ও গাড়ির পোড়ানোর দুটি মামলায় সিআইডির আবেদনে মামুনুলকে তিন দিন করে মোট ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, তিন মামলায় জেলা পুলিশ ৯ দিন ও সিআইডির দুটি মামলায় আরও ৬ দিন, মোট ১৫ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। পিবিআইয়ের মামলায় তাঁকে তিন দিনের রিমান্ড আগেই মঞ্জুর করেন আদালত। ওই মামলায় আদালতে অবহিত করে মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়েছে পিবিআই। মামুনুলের বিরুদ্ধে সোনারগাঁয়ে রিসোর্টের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটিসহ মোট আটটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ওই তিন মামলায় মামুনুল হক এজাহারভুক্ত আসামি।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশ-হেফাজতের সংঘর্ষে পুলিশ-সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন দুজন। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১৮টি গাড়ি। ভাঙচুর করা হয়েছে দুটি গণমাধ্যমের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ শতাধিক যানবাহন। ওই দিন সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা অচল হয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় পরদিন রাতে পুলিশ পাঁচটি, র‍্যাব একটিসহ মোট ছয়টি মামলা করা হয়। পরে আরও তিনটি মামলা করেন ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির মালিকেরা। এ নিয়ে মোট নয়টি মামলা করা হয়।

এদিকে গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি রুমে মামুনুলকে নারীসহ অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় খবর পেয়ে হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে তাঁকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। পরে হেফাজতের নেতা–কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভাঙচুর করেন। ভাঙচুর করেন শতাধিক যানবাহন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হেফাজতের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ চার শতাধিক শটগান ও টিয়ার শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টি এম মোশাররফ হোসেনকে বদলি করা হয়।

সূত্রঃ প্রথম আলো

আপনার মতামত জানান