ইসরাইলী বিশ্লেষকের প্রতিবেদনে উঠে আসলোঃ হামাসকে মোকাবিলায় ইসরাইল দুর্বল

প্রকাশিত

গাজা উপত্যকা থেকে হামাস ইসরাইলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হাজার হাজার রকেট ছুড়েছে। এসব রকেট যদি সরাসরি বিভিন্ন ভবন বা জনাকীর্ণ এলাকায় পড়ত তা হলে বড় ধরনের ক্ষতি হতো ইসরাইলের। কিন্তু ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বাঁচিয়ে দিয়েছে দেশটিকে। তবে তেলআবিবের জন্য আশঙ্কার খবর হচ্ছে— এ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করে ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলার ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছে হামাসের রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র।

এর পর থেকে বিশ্লেষকরা ইসরাইলের নিরাপত্তার নানা ত্রুটি খুঁজে বের করছেন। গাজার প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস-ইসলামিক জিহাদের হামলায় যদি এ অবস্থা হয়, তবে লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে জড়ালে ইসরাইলের পরিণতি কী হবে তা নিয়ে শঙ্কিত দেশটির নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

ইসরাইলের পররাষ্ট্র এবং জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক বিশ্লেষক গিল মার্সিয়ানো। যিনি কাজ করছেন বার্লিনভিত্তিক থিংক ট্যাংক জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্স (এসডব্লিউপি)-এ। ইসরাইলের ইংরেজি দৈনিক হারেৎজ পত্রিকায় এক কলামে তিনি লিখেছেন— ফিলিস্তিন ও লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে মোকাবিলায় ইসরাইল দুর্বল।

তিনি লিখেছেন— জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গত কয়েক দশকে ‘ওয়ার বিইটু্ন দ্য ওয়ার্স’ নীতি ইসরাইলের অন্যতম রক্ষাকবচ। কূটনৈতিকভাবে সংকট সমাধানের চেয়ে সামরিক আগ্রাসন সুবিধাজনক বিকল্প হিসেবে স্থান করে নিয়েছে এ নীতি। কিন্তু এ নীতির অনুসরণ ইসরাইলের জন্য বাস্তব যুদ্ধের দুঃখ-কষ্টের মধ্যে টিকে থাকার অবস্থা খুবই সীমিত পর্যায়ে।

মার্সিয়ানোর মতে, ইসরাইল আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত এবং তার ভাণ্ডারে গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা রয়েছে- এমনটিই বলা হয় সবসময়। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিরোধ অক্ষের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে ইসরাইল তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না।

‘প্রায় প্রতিটি নতুন সংঘাতে ইসরাইল শক্তি হারাচ্ছে আর গাজার প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে’, যোগ করেন তিনি।

তার লেখায় সাম্প্রতিক সংঘাতে গাজার হামাস ও ইসলামিক জিহাদ আন্দোলনের যুদ্ধ-সক্ষমতা এবং শত্রুপক্ষের ক্ষতি করার ক্ষমতার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সাম্প্রতিক গাজা আগ্রাসনের সময় ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ মানুষ প্রতিবাদ জানিয়ে সমাবেশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও ব্যবহারকারীরা ছিল সরব। এটিকে ফিলিস্তিনিদের জন্য বড় ধরনের সফলতা হিসেবে দেখছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

এ বিষয়ে গিল মার্সিয়ানো লেখেন— আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরাইল দুর্বল হয়ে পড়ছে। অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি ফাতু বেনসুদা গত মার্চ মাসে তদন্তের যে পদক্ষেপ নেন তাতে দেশটির বিপদে পড়েছে।

ইসরাইলি বর্বরতার সর্বশেষ নজির গাজায় সাম্প্রতিক ইসরাইলি আগ্রাসন। টানা ১১ দিনের সংঘাতে ২৫৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬ শিশু ও ৩৯ নারী রয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি।

আপনার মতামত জানান