হিজাবি সাংবাদিক প্রতিবেদক উত্তর আমেরিকার টিভিতে

প্রকাশিত

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের তথ্য মতে, বিভিন্ন চ্যানেলে প্রায় ৫২ হাজার ব্রডকাস্ট রিপোর্টার ও করেসপন্ডেন্টকে দর্শকদের কাছে সংবাদ সরবরাহ করতে দেখা যায়। বিভিন্ন শ্রেণির দর্শকদের কাছে সংবাদ সরবরাহ করতে বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা টিভি রিপোর্টাররা কাজ করে থাকেন। এতদসত্তেও টিভি চ্যানেলের সংবাদ পরিবেশন ও প্রতিবেদনে দর্শকদের পরিসংখ্যান অনুপাতে তেমন কোনো হিজাবি রিপোর্টারকে দেখা যায় না।

টেলিভিশন অডিয়েন্স রিসার্চ কোম্পানি নিলসনের তথ্য মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় পর্যায়ে ২১০টি টেলিভিশন সংবাদ সম্প্রচার করে। যুক্তরাষ্ট্রের নেবরাস্কার নর্থ প্লেটে ১৪ হাজার দর্শক টিভি দেখেন। এদিকে নিউইয়র্ক সিটির টিভি চ্যানেলেও প্রায় ৭৫ লাখ দর্শক আছেন। তাই টিভি চ্যানেলের এ বাজারে জাতি, বর্ণ ও বয়সসীমা অনুসারে ক্রমবর্ধমান বৈচিত্রপূর্ণ জনসংখ্যার প্রভাব দৃশ্যমান।

যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টটিকাটের হার্টফোর্ডে ডাব্লিওএফসিবি টিভির মর্নিং নিউজের প্রথম হিজাবি প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন আয়াস গালাল। তিনি বলেন, ‘আমি নিজের পেশার জন্য নিজের বিশ্বাসের সঙ্গে কোনো কম্প্রাইজ করব না। উত্তর আমেরিকায় হিজাব পরা টিভি সাংবাদিক সংখ্যা খুবই কম হলেও এখন এ অবস্থার পরিবর্তন শুরু হয়েছে।’

নর্থ আমেরিকার বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে অল্প কয়েকজন হিজাবি রিপোর্টারদের মধ্যে গালালও একজন। টিভিতে প্রতিবেদনের সময় সর্বদা হিজাব পরেন তিনি। গালাল জানান, ‘বড় হয়ে আমি টিভিতে আমার মতো কাউকে দেখতে পাইনি। তাই টিভিতে হিজাব পরে কাজ করতে গিয়ে সত্যিই আমি কিছুটা ভয়ে ছিলাম।’

প্রথমে প্রযোজক হিসেবে কাজ করলেও পরবর্তীতে গালাল টিভি রিপোর্টার হিসেবে কাজ শুরু করেন। টিজাব পরে টিভির পর্দায় কাজ করায় অনেক ইতিবাচক কমেন্ট আসে। তিনি বলেন, ‘অনেক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। মুসলিমদের কাছে সমর্থনের বার্তা পেয়ে আমি খুবই অনুপ্রাণিত হই। অনেকে নিজের মতো কাউকে পর্দায় দেখতে পেয়ে অভিভূত হয়।’

সংবাদ সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গালাল বলেন, ‘বিশেষ মুসলিম তরুণী আছেন যারা নিজেদের সক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান। কারণ তাঁরা নিজেদের কাউকে এ ক্ষেত্রে দেখতে পান না। তাই নিজের মতো কাউকে দেখা ও নিজের মতো চিন্তাশীল কেউ পাশে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো কিছুই সম্ভব যদি তাতে তোমার মন স্থির থাকে।’

গালাল এক কথাও স্বীকার করেন, ‘আমার কাছে বিরূপ মন্তব্যে ভরপুর বেশ কিছু ইমেলও ছিল। সত্যি কথা বলতে, অনেকে ‘উগ্র ইসলাম’ সম্পর্কে কিছু কথা বলেন। আর মজার বিষয় হলো, তাঁরা আমার সাংবাদিকতার দক্ষতা বার বর্ণনা ভঙ্গি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বরং তারা শুধুমাত্র আমি দেখতে কেমন তা নিয়েই কথা বলেছে।’

সূত্র : দ্য ন্যাশনাল নিউজ

আপনার মতামত জানান