সোনারগাঁয়ে রপ্তানীযোগ্য পণ্যসহ ছিনতাই হওয়া কাভার্ডভ্যান উদ্ধার
চোরাকারবারি ও ছিনতাই গ্রুপের চিহ্নিত সদস্য জসীমউদ্দিন বাবু ও লিটন সান ফেব্রিকস নামের একটি কম্পানীর ভিতরে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মালভর্তি ও সিলগালা একটি কভার্ডভ্যান নিয়ে প্রবেশ করে। জসীমউদ্দিন বাবু নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা শিল্পনগরী এলাকার ঝাউচর গ্রামের সামসু ওরফে আদম সামসুর ছেলে এবং লিটন ছয়হিস্যা গ্রামের আক্তার হোসেনের ছলে। সানফেব্রিকসের সিকিউরিটিরা বাঁধা দেওয়ার আগেই গাড়িটি বালুতে দেবে গেলে এবং এলাকাবাসী জড়ো হলে গাড়ির চালকসহ সবাই পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি সোনারগাঁ থানা পুলিশকে জানালে তারা গাড়িটি জব্দ করে সোনারগাঁ থানায় নিয়ে আসে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত গাড়ির মালিক হারুন-অর-রশিদ গাড়ি ছিনতাই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা যায়।
সোনারগাঁ থানা পুলিশ সুত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের টিপুরদী এলাকা থেকে বিদেশে রপ্তানীযোগ্য পণ্যসহ ছিনতাই হওয়া একটি কাভার্ডভ্যান (ঢাকা মেট্রো ট ১১-৬২ ৪৯) স্থানীয়রা আটক করে থানা পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ওই কাভার্টভ্যানটি ছিনতাই হয়। পরে ওইদিনই রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মেঘনা শিল্প নগরীর ঝাউচর এলাকার সান ফেব্রিকস নামের একটি কোম্পানির ভেতর থেকে কাভার্টভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়,নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড থেকে ছেড়ে আসা ওই কাভার্টভ্যানটিতে রপ্তানিযোগ্য পণ্য নিয়ে সিলগালা করে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাড়কের টিপুরদী এলাকায় পৌঁছালে কাভার্টভ্যানটি চালক ও হেলপারের সহযোগিতায় ছিনতাই হয়। পরে কাভার্টভ্যানটিকে ঝাউচর এলাকার সান ফেব্রিকস নামের একটি কোম্পানির গোডাউনের নেওয়ার সময় কোম্পানির ভেতরে বালুর মধ্যে আটকে গেলে স্থানীয়রা টের পায়। এ সময় কার্ভাটভ্যানের চালক ও হেলপারসহ অন্যরা পালিয়ে যায়।
সান ফেব্রিকসের সিকিউরিটি ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দু’তিন দিন আগে ঝাউচর গ্রামের সামসু ওরফে আদম সামসুর ছেলে জসিমউদ্দিন বাবু ও ছয়হিস্যা গ্রামের আকতার হোসেনের ছেলে লিটন প্রতিষ্ঠানটির পরিত্যক্ত একটি গোডাউনে কিছু ইলেকট্রিক মালামাল রাখার উদ্দেশ্যে ভাড়ার নিতে যায়। সোমবার রাতে জসিমউদ্দিন বাবু ও লিটন ওই কাভার্ডভ্যানটি পাহাড়াদারদের কথা অমান্য করে জোরপূর্বক সান ফেব্রিক্সের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। তখন গাড়িটি বালুর মধ্যে আটকে গেলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
সান ফেব্রিকসের ম্যানেজার দাউদ মিয়া জানান, কোম্পানির পক্ষ থেকে গোডাউন ভাড়া দেওয়া হয়নি। জসিমউদ্দিন বাবু ও লিটন গাড়ি নিয়ে এলাকার প্রভাবখাটিয়ে জোর করে কোম্পানির ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। সে সময় গাড়িটি ৭-৮জন লেবারসহ চালক, হেলপার, বাবু ও লিটন পালিয়ে যায়। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাভার্ডভ্যানটি তাদের জিম্মায় নেয়।
ঝাউচর গ্রামের আল আমিন জানান, কোম্পানির ভেতরে একটি গাড়ি বালুতে আটকে গেলে ক্রেন দিয়ে উদ্বারের জন্য আমাকে জানায়। পরবর্তীতে গাড়ির চালক ও হেলপারকে খোঁজার পর তাদের পাওয়া যায়নি। পরে সন্দেহ হলে কাভার্ডভ্যানের বডিতে থাকা মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে গাড়িটি ত্রিবর্দী এলাকা থেকে ছিনতাই হয়েছে বলে জানানো হয়। ঘটনার পর থেকে চালক ও হেলপারের মোবাইল বন্ধ রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, সোনারগাঁয়ের টিপুরদী, কাঁচপুর এলাকা থেকে প্রায়ই পণ্যবাহি ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ছিনতাই হয়। প্রভাবশালী মহলের সহযোগীতায় একটি আন্তঃজেলা ডাকাত দল এ ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবী জানান তারা।
এ দিকে, অভিযুক্ত জসিমউদ্দিন বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একটি গোডাউন ভাড়া করতে ওই কোম্পানিতে গিয়েছিলেন। কোম্পানির সাথে ভাড়া নিয়ে কথা হয়েছে। এ ছিনতাই হওয়া কাভার্টভ্যানের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেননা।
সোনারগাঁ থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, রপ্তানিযোগ্য পন্যসহ সিলগালা করা একটি কাভার্ডভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। কাভার্টভ্যানের লোকজনকে খবর দেওয়ার পর কিছুক্ষন আগে মালিক এসেছে। তাদেও উপস্থিতিতে সীলগালা করা গাড়ি খুললে দেখা যাবে কি পণ্য রয়েছে। তবে, ধারণা করা হচ্ছে রপ্তানীযোগ্য পোশাক হতে পারে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আপনার মতামত জানান