মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে আরো পেছাল বাংলাদেশ

প্রকাশিত



বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশ আরো এক ধাপ পিছিয়েছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১৫২তম। সূচকে সবার শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। আর আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া রয়েছে একেবারে তলানিতে। গতকাল মঙ্গলবার ২০২১ সালের এই সূচক প্রকাশ করে গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)।



২০২০ সালের সূচকে ১৫১তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে ছিল ১৫০তম। অর্থাৎ এবার নিয়ে টানা তিন বছর আরএসএফের সূচকে বাংলাদেশের অবনমন ঘটল। এমনকি আশপাশের দেশগুলোর অবস্থানও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। আরএসএফের দৃষ্টিতে পাকিস্তান (১৪৫), ভারত (১৪২), মিয়ানমার (১৪০), শ্রীলঙ্কা (১২৭), আফগানিস্তান (১২২), নেপাল (১০৬), মালদ্বীপ (৭৯) ও ভুটানের (৬৫) গণমাধ্যম বাংলাদেশের তুলনায় স্বাধীন।
বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমকর্মীরা কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন তার ভিত্তিতেই ২০০২ সাল থেকে এই সূচক তৈরি করে আসছে আরএসএফ। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আরএসএফের এবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি ও লকডাউনের প্রভাবে দেশটিতে সাংবাদিকদের ওপর বেসমারিক ও পুলিশি সহিংসতা বেড়ে যায়। মহামারি কিংবা সমাজে এর প্রভাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় অনেক সাংবাদিক, ব্লগার ও কার্টুনিস্টকে গ্রেপ্তার এবং সাজা দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করতে সরকারের কাছে এখন ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ নামের একটি বিচারিক অস্ত্র আছে, যেটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে ‘নেতিবাচক প্রচারণা’ চালালে এই আইনের অধীনে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এর ফলে গণমাধ্যমকর্মীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের (সেলফ-সেন্সর) মাত্রা নজিরবিহীন পর্যায়ে চলে গেছে। কারণ সম্পাদকরা এখন স্বাভাবিকভাবেই কারাবন্দি কিংবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে চান।

ক্ষমতাসীন দল সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অনেক কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে সহিংসতার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অনেক ওয়েবসাইট। যেসব সাংবাদিক দুর্নীতি কিংবা স্থানীয় অপরাধীচক্রের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামেন, তাঁরা ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন। এই নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।


আরএসএফের এই সূচকে ২০১৩ সাল থেকে আছে বাংলাদেশ। আগের বছরের চেয়ে এবার বাংলাদেশের স্কোর সামান্য (০.৩৪) বেড়ে ৪৯.৩৭ হয়েছে। কিন্তু সার্বিকভাবে বাংলাদেশ এক ধাপ পিছিয়েছে। সূত্র : এএফপি।

আপনার মতামত জানান