গাড়ি চালকের টাকা লুটের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশিত



চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ডিবি পরিচয়ে এক গাড়ি চালকের ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা লুট করায় পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টর, এক কনস্টেবল ও তিন পুলিশ সোর্সের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী গাড়িচালক মো. আবু জাফর বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর জেলার গাছা থানার গাজীপুর পৌরসভার অস্থায়ী বাসিন্দা জামালপুরের বক্সীগঞ্জ থানার বিনোদের চর গ্রামের মো. জহুরুল হকের ছেলে মো. আবু জাফর (৪৩) গত ২০ ডিসেম্বর সকালে একটি পিকআপ গাড়ি কেনার উদ্দেশ্যে সীতাকুণ্ডে আসেন। কিন্তু দরদামে না মেলায় কারটি তিনি না কিনে সন্ধ্যায় ফিরে যাবার সময় পৌর সদর বাসস্ট্যান্ডে শ্যামলী বাস কাউন্টারে তিনজন পুলিশ সোর্স তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে।

এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সীতাকুণ্ড থানার এস আই মো. সাইফুল আলম ও ওসির বডি গার্ড কনস্টেবল মো. সাইফুল ইসলাম (দুজনের নামই সাইফুল) সেখানে যোগ দিয়ে নিজেদেরকে ডিবি বলে পরিচয় দেয় এবং গাড়ি চালকের কাছে ইয়াবা আছে বলে ভয় দেখিয়ে তাদের গাড়িতে তুলে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে পেটে ইয়াবা আছে বলে ভয় দেখিয়ে এক্সরে করান। কিন্তু ইয়াবা না পেলেও পরে আরো বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গাড়ি ক্রয়ের জন্য তার সঙ্গে রাখা ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা লুটে নেয় এবং তাকে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে পরে একটি গাড়িতে তুলে দেয়। সে গাড়িতে তিনি ঢাকায় চলে যান। কিন্তু অনেক কষ্টে অর্জিত টাকা এভাবে লুটে নেওয়ায় গাড়িচালক আবু জাফর তা মানতে পারেননি। তিনি পুনরায় সুবিচারের আশায় সীতাকুণ্ড থানায় এসে ঘটনা জানান। ঘটনাটি জানতে পারেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারও। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ দিলে সীতাকুণ্ড সার্কেলের এডিশনাল এসপি মো. আশরাফুল করিম ঘটনার তদন্ত করেন।

অন্যদিকে সীতাকুণ্ডে আসার পর আবু জাফর যেখানে ঘটনা ঘটেছিল সবখানে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের পরিচয় জানতে পারেন। শেষে ভুক্তভোগী আবু জাফর এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানার এস আই সাইফুল আলম ও কনস্টেবল মো. সাইফুলসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- পুলিশ সোর্স সীতাকুণ্ড পৌরসভার বাসিন্দা পুলিশ সোর্স মো. রিপন (৩৫), সোর্স হারুন (৩৩) এবং গাড়ি চালক রাজু (২৫)।

এদিকে মামলা দায়েরের পর প্রথমদিকে এস আই সাইফুল ও কনস্টেবল সাইফুল পালিয়ে গেলেও পরে পুলিশ সুপারের চাপে বৃহস্পতিবার তারা থানায় এসে আত্মসমর্পণ করলে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান করা হয়। এদিকে বৃহস্পতিবারের এ ঘটনার পর সীতাকুণ্ড থানার ওসি, ওসি (তদন্ত)সহ কেউই সাংবাদিকদের ফোন ধরেননি। জানতে চাইলে ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা সীতাকুণ্ড সার্কেলের এডিশনাল এসপি মো. আশরাফুল করিম এস আই সাইফুল ও কনস্টেবলের গ্রেপ্তার ও ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার সত্যতা স্বীকার করেন। এর বেশি তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আপনার মতামত জানান