৫ম-৬ষ্ঠ শ্রেণির ৩ ছাত্রী বিয়ে করতে পালিয়ে এসেছে চট্টগ্রাম
ছয় কিশোর-কিশোরী। এর মধ্যে তিন কিশোরীর একজন পঞ্চম ও দুজন ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর তিন কিশোরের একজন অষ্টম শ্রেণি ও দুজন নবম শ্রেণি পড়ুয়া। ছয়জন মিলে মাত্র ছয় হাজার টাকা নিয়ে চলে আসে চট্টগ্রামে। উদ্দেশ্য তারা বিয়ে করবে।
চট্টগ্রামে এসে এক পরিচিতজনের সঙ্গে তারা দেখা করতে গিয়েছিল বন্দরটিলা এলাকায়। কিন্তু সেই পরিচিত মানুষকে তারা খুঁজে পায়নি। মোবাইল নম্বর না থাকায় ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগও করা যায়নি। ফলে তারা একজন অটোরিকশাচালকের সহযোগিতা নিয়ে এক জায়গায় এক রাত থাকার ব্যবস্থা করে। কিন্তু সেই বাসায় তারা বিপদে পড়তো। অল্পের জন্য রক্ষা পায়। পরে চলে আসে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে। সেখান থেকেই পুলিশ তাদের আটক করে নিয়ে যায় কোতোয়ালী থানায়।
এই ছয় কিশোর কিশোরী চট্টগ্রামে রেলযোগে চট্টগ্রামে পৌঁছে বৃহস্পতিবার। ওই রাতে বন্দরটিলা এলাকায় একটি বাসায় থাকে। সেখানে বিপদের মুখোমুখি পড়ার পর উদ্বিগ্ন হয়ে পরদিন শুক্রবার ফিরে আসে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে। এই স্টেশনে ঘোরাফেরার সময়ই শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা পুলিশের জেরার মুখে পড়ে। এরপর পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। আজ শনিবার দুপুরে ছয় কিশোর-কিশোরীর পরিবার কোতোয়ালী থানায় এসে তাদের জিম্মায় নিয়ে যায়।
কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, এই ছয় কিশোর-কিশোরী ঢাকার ধামরাই থেকে বিয়ে করতে চট্টগ্রামে এসেছিল। তারা নাবালক। না বুঝে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ মামলা করেনি। সমাজসেবা অফিসার ও জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে তাদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এর আগেই তাদের পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেন।
ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, রেল স্টেশনে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার সময় তারা অসংলগ্ন কথা বলেছিল। দুজন নিজদের ‘স্বামী-স্ত্রী’ এবং অন্যরা বন্ধু পরিচয় দেয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, বিয়ের জন্য ধামরায় থেকে তারা চট্টগ্রামে এসেছে। তাদের ব্যাগে কয়েকজোড়া চুড়ি ও কিছু কসমেটিকস পাওয়া গেছে।
কিশোর-কিশোরীরা ধামরাইয়ে। তাদের পাঁচজন শিক্ষার্থী। অন্যজন করোনাভাইরাস সংক্রমন শুরুর পর টাইলস মিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন।
তাদের সবার বাড়ি একই এলাকায়। সেই সুবাদে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আবার ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীর বিয়ে ঠিক হয় পারিবারিকভাবে। সেই কারণে তারা তিন জুটি সিদ্ধান্ত নেয় পালিয়ে চট্টগ্রামে এসে তারা বিয়ে করবে। দুই সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনার পর তারা চট্টগ্রামে চলে আসে। চট্টগ্রামে এসে বন্দরটিলা এলাকায় একজনের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল এক কিশোরের। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে তারা খুঁজে পায়নি। শেষে অটোরিকশা চালককে অনুরোধ করে তারা এক রাত কোনো বাড়িতে থাকার অনুরোধ জানায়। এই অটোরিকশা চালক তার পরিচিত এক নারীর বাসায় গিয়ে তাদের এক রাত থাকার ব্যবস্থা করে দেন ৭০০ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে।
বৃহস্পতিবার সেই বাসা থেকে বেরিয়ে তারা ধামরাইয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফিরে আসে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে। এখানে এসে তাদের টাকার টান পড়ে। রাতের ট্রেনে ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। সন্ধ্যায় পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নেয়।
আপনার মতামত জানান