হায়দার আলীকে সেরার স্বীকৃতি দিল মালয়েশিয়ান প্রেস ইনস্টিটিউট
মানবপাচার এবং মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুর্বিষহ জীবন নিয়ে বাংলাদেশের কালের কণ্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক হায়দার আলীর অনুসন্ধানী ধারাবাহিক প্রতিবেদনকে সেরা প্রতিবেদনের স্বীকৃতি দিয়েছে মালয়েশিয়ান প্রেস ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশের কালের কণ্ঠ এবং মালয়েশিয়ার শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা মালয়েশিয়াকিনির যৌথ অনুসন্ধানে প্রবাসী শ্রমিকদের কথা উঠে আসে। ‘মালয়েশিয়ায় স্বপ্নভঙ্গ’ শিরোনামে ছয় পর্বের প্রতিবেদন প্রকাশ করে কালের কণ্ঠ। আর চার পর্বের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় মালয়েশিয়াকিনিতে। চার পর্বের এই প্রতিবেদন মালয়েশিয়ায় গত বছরের সেরা অনুসন্ধানী ধারাবাহিক প্রতিবেদন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। গতকাল পুরস্কারের সম্মাননা ক্রেস্ট এবং মালয়েশিয়া মুদ্রায় ১০ হাজার রিংগিট তুলে দেয়া হয় মালয়েশিয়াকিনির হাতে।
এর আগে স্বপ্ন নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেওয়া শ্রমিকদের স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা নিয়ে কালের কণ্ঠে হায়দার আলীর অনুসন্ধানী সিরিজ প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের প্রশংসা আসে বিভিন্ন দেশ থেকে। এই সাংবাদিককে পুরস্কৃত করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
গত বছরের ২৩ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ‘মালয়েশিয়ায় স্বপ্নভঙ্গ’ শিরোনামে ছয় পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায়। টানা ছয় দিনই প্রধান নিউজ হিসেবে পত্রিকায় ছাপা হয়। মালয়েশিয়ার প্রবাসীদের নিয়ে শুধু কালের কণ্ঠেই নয়- মালয়েশিয়ার জনপ্রিয় গণ্যমাধ্যম মালয়েশিয়াকিনি পত্রিকায় চার পর্বের দুটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন যৌথভাভাবে প্রকাশিত হয় এবং দুটি প্রতিবেদন শুধুমাত্র বাইলাইনে কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার হায়দার আলীর নামেই প্রকাশিত হয়। মালয়েশিয়াকিনিতে ধারাবাহিক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলে মালয়েশিয়ায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। ইতিমধ্যে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক কালের কণ্ঠের এ প্রতিবেদকের কাছে প্রবাসীদের সঙ্গে প্রতারণার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত এবং দালালদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে সহযোগিতার অনুরোধ জানান।
এদিকে, মালয়েশিয়াকিনি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সেখানে মালয় মেইলসহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশনেও এই নিউজ প্রচার করা হয়। মালয়েশিয়াকিনি ও মালয় মেইলের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম সারি মিডিয়ায় প্রবাসীদের নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগেও কালের কণ্ঠে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনের জন্য হায়দার আলীকে পুরস্কৃত করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই প্রতিবেদনে উঠে আসে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার ভ্যানচালক হাসমত আলীর কথা। যিনি নিজের, স্ত্রী বা একমাত্র সন্তানের নামে না কিনে সারাজীবনের সঞ্চয়ের টাকায় জমি কিনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে। এমনই দুর্লভ ঘটনা নিয়ে ২০১০ সালের ২ জুন ‘বিরল ভালোবাসা’ শিরোনামে কালের কণ্ঠের প্রথম প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালের কণ্ঠের এই সাংবাদিক হায়দার আলীকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়- একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারও দিয়েছিলেন এবং পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সফরে তুরস্কের ইস্তুাম্বুলেও নিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগেও ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশের পর ‘নিখোঁজের প্রমাণ নেই মাদ্রাসায় মাদ্রাসায়’ শিরোনামে চার পর্বে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য ‘জাপান-বাংলাদেশ ইউনেস্কো জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিলেন সাংবাদিক হায়দার আলী।
আপনার মতামত জানান