সোনারগাঁয়ে স্কুলের জায়গা দখলের চেষ্টা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা শিল্পনগরী এলাকায় অবস্থিত মেঘনা শিল্পনগরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মেঘনা শিল্পনগরী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের এবং মুক্তিযোদ্ধা ভবনের জায়গা চিহ্নিত ভূমিদস্যূ কানকাটা মতিন বাহিনী জোর করে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনায় উপজেলার প্রতাবেরচর এলাকায় মেঘনা শিল্পনগরী সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের সামনে স্কুলের শিক্ষার্থী, শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং এলাকাবাসীসহ কয়েক হাজার মানুষ মিলে ভূমিদস্যূ কানকাটা মতিনের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনর ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ সময় শিল্পনগরী সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ওবায়দুল হক জানান, গত বৃহস্পতিবার ভূমিদস্যূ মতিন ২০-৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী সঙ্গে নিয়ে স্কুলের জায়গায় অবস্থিত মার্কেট ও মুক্তিযোদ্ধাদের ভবনের জায়গা মতিনের দাবি করে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেয়। অথচ গত ২০১১ সাল থেকে আমি এই স্কুল কর্মরত আছি, কখনো কাউকে স্কুল মার্কেটের জায়গা দাবিদার হিসেবে দেখতে পাইনি। এই ভুমিদস্যূ মতিন বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
অন্যদিকে সোনারগাঁ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহেল রানা বলেন, প্রতাবেরচর এলাকায় সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গায় আমরা মুক্তিযোদ্ধারা গত প্রায় ২০ বছর যাবত একটি ভবন নির্মাণ করে নিয়মিত অফিস করে আসছি। তবে এলাকার ঝাউচর গ্রামের মৃত পীর মোহাম্মদের ছেলে চিহ্নিত ভূমিদস্যূ কানকাটা মতিন বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে আতাত করে সরকারি স্কুল ও মুক্তিযোদ্ধা ভবনের জায়গাটিতে সাইনবোর্ড সাটিয়ে জোর দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কানকাটা মতিন সে গত ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মেঘনা শিল্পনগরী এলাকায় ১০টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের জায়গা কেনার দালালি করেন। সে সময় এলাকাবাসীর কাছ থেকে ১ শতাংশ জায়গা কেনার কথা বলে প্রতারণা করে মানুষের কয়েক বিঘা জায়গা লিখে নিয়ে সে কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে। এই সময় মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায়। পরে ২০০৫ সালে দিকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেই শত শত এলাকাবাসী ভূমিদস্যূ কানকাটা মতিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে তার বাড়ি ঘেরাও করে এলাকা ছাড়া করেন। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশ থেকে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর আবারো মানুষের জায়গা জমি দখল করতে ভূমিদস্যূ কানকাটা মতিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, সোনারগাঁ ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের মাধ্যমে ভূমিদস্যূ বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করবেন।
এদিকে অভিযুক্ত কানকাটা মতিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এটা কোন খাস খতিয়ানের জায়গা না, তিনি খরিদ সূত্রে ওই জায়গার মালিক বলে জানান। তবে এলাকায় বসবাস না করার কারণে কখনোই ভোগ দখলে ছিলেন না। এখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় নেই, বিএনপির আমল তাই তিনি তার জায়গা দাবি করে দখল করতে গেছেন বলে জানিয়েছেন।
আপনার মতামত জানান