সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদীতে ডাকাতি,৭০ ভরি স্বর্ণ ও ৪০টি মোবাইল লুট

প্রকাশিত


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলারে বিকেল বেলায় দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে সাড়ে চারটার সময় আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া থেকে বৈদ্যের বাজার আসার পথে আমানসিম কম্পানীর নিকটে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বৈদ্যের বাজার নৌ ফাড়ির ইনচার্জ শাহীন মামুন এ ঘটনা নিশ্চত করেন।


ডাকাতের কবলে পড়া জামাল (২৭) নামে একজন জানান, যে ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে সেখানে তারা সব আত্মীয় স্বজন ছিলেন। বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের সাতভাইয়া পাড়ার আমজাদ হোসেনের সদ্য বিবাহিত একমাত্র কন্যা ও তার ভাতিজিকে নাইওর আনতে আত্মীয় স্বজন মিলে প্রায় ৫০জন আড়াই হাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া গ্রামে মেয়ের শ^শুড়বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে আসছিলেন। বিকেল ৪ দিকে হাড়িয়া বৈদ্যপাড়া বরাবর আমানসিম কম্পানীর সামনে আসতেই একটি টুইন ইঞ্জিনের স্পীডবোট দ্রুতগতিতে তাদের ট্রলারের গতিরোধ করে ১০/১২ জনের একটি অস্ত্রধারী ডাকাত দল ট্রলারে উঠে। এ সময় তাদের ৫ জনের হাতে পিস্তল এবং বাকিদের হাতে চাপাতি ও রোলার (লাঠি) ছিল। তারা ট্রলারে উঠেই নারীদের উপর আক্রমন চালায়। তিনি জানান, ৫০ জনের মধ্যে ৪৫ জনই ছিল নারী ও শিশু। নারীদের সকলের পড়নে স্বর্ণালাঙ্কার এবং হাতে দামী মোবাইল ছিল। ডাকাত দল সবার কাছ থেকে ৪৫ টি মোবাইল এবং ৭০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যায়। তিনি আরো জানান, এখানে প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

নাজমা আক্তার বলেন, আমার দেবরের একমাত্র কন্যাকে আনতে সবাই মিলে বিয়াই বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ির খুব কাছে আসতেই ডাকাত দল হামলা চালায়। ডাকাতদের বোটটি আমান সিমেন্ট কম্পানী কাছে ভিড়ানো ছিল। আমাদের ট্রলার দেখেই অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং যা কিছু আছে সবকিছু দিয়ে দেয়ার জন্য বলে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। আমার কাছ থেকে একটি মোবাইল, গলার চেইন, কানের দুল, হাতের বালা ছিনিয়ে নেয়। যারা এসব খুলে দিতে দেরি করেছে তাদেরকে পিস্তলের বাট ও লাঠি দিয়ে অমানবিক ভাবে পিটিয়েছে। তিনি আরো জানান, মেয়ের খালা হালিমার কাছ থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও দুটি মোবাইল কেড়ে নেয়।

মেয়ের ফুফু বলেন, আমি ডাকাত দেখে নিজের গলার হার, কানের দুল খুলে ট্রলারের পাটাতনের নিচে ফেলে দেই। কিন্তু একজন ডাকাত এসে আমাকে বলে তোর গলার হার আর কানের দুল কোথায়? আমি বলি আমার কোন স্বর্ণ নেই। এমন সময় আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে মারতে বলে দাওয়াতে তো তোর পড়নে স্বর্ণ দেখেছি । বলেই আবার মারতে শুরু করলে আমি পাটাতনের নিচ থেকে বের করে তাদের হাতে দিয়ে দেই। শুধু মোবাইল আর স্বর্ণ নয় তারা আমাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, দামী কাপড় সহ সব নিয়ে গেছে।

বৈদ্যের বাজার নৌ ফাড়ির ইনচার্জ শাহীন মামুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি আজকে মাত্র এখানে জয়েন করেছি। ডাকাতির ঘটনা জানতে পেরেছি। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে ফাড়িতে এসে তিন জনের হারানো মোবাইল নম্বর, আইএমই নাম্বার দিয়ে গেছে। আমরা অতিদ্রুত ডাকাত দলকে সনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্ঠা চালাচ্ছি।

আপনার মতামত জানান