সোনারগাঁয়ে ওমেদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মুক্তিযোদ্ধার কাছে এসিল্যান্ড অফিসের সার্ভেয়ারের সহযোগীর (ওমেদার) বিরুদ্ধে ঘুষ দাবীর অভিযোগ করেছেন এক মুক্তিযোদ্ধা। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মো জামাল মোল্লা ১৯ জুলাই মন্ত্রীপরিষদ সচিব ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ভাগলপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. জামাল মোল্লা ‘এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে’ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা অনুসারে চাষাবাদের জন্য তার জমির পাশে একটি অনাবাদি ও অকৃষি জমির বন্দোবস্ত (লিজ) চান।
মুক্তিযোদ্ধা জামাল মোল্লা জানান, র্দীঘ ৬ মাসেরও অধিক সময় ধরে ওই আবদেনটি সোনারগাঁ ভূমি অফিসে (এসিল্যান্ড) আটকে থাকে। সম্প্রতি এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে সোনারগাঁ এসিল্যান্ড অফিসের সার্ভেয়ারের সহযোগী হিসেবে কাজ করা উমেদার মো. সোহাগ কাজ করিয়ে দেয়ার কথা বলে তার কাছে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন৷১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে এসিল্যান্ড আল মামুন অশোভন আচরন করেন।
এসিল্যান্ড অফিস সুত্রে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল মোল্লা ৮ মাস পূর্বে একটি অকৃষি জমির বন্দোবস্তের জন্য তৎকালীন এসিল্যান্ড নাজমুল হুসেইনের বরাবর আবেদন করেন। তৎকালীন সার্ভেয়ার শফিউর রহমান সরেজমিন তদন্ত করে অকৃষি জমির শ্রেণি নাল লিখে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু আবেদনকারি মুক্তিযোদ্ধা নাল জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ডোবা লেখার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। তৎকালীন সার্ভেয়ার শফিউর রহমান জমির শ্রেণি পরিবর্তন না করায় তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ সেলিম রেজা বরাবর ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ করেন। এসিল্যান্ড নাজমুল হুসেইন বদলী হওয়ার আল মামুন এসিল্যান্ড হিসেবে যোগদান করেন। সার্ভেয়ার বন্দোবস্ত চাওয়া জমি সরেজমিনে দুইবার পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদন পেয়ে এসিল্যান্ড আল মামুন ১৬ জুলাই সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলামের বরাবর বন্দোবস্ত দেওয়া যায় মর্মে সুপারিশ করেন। মুক্তিযোদ্ধা জামাল মোল্লা সেখানে জমির শ্রেণি নাল লেখা দেখে এসিল্যান্ড অফিসে এসে এসিল্যান্ডের কাছে এর কৈফিয়ত চান।
ফাইলটি পাঠাতে বিলম্বের কারন হিসেবে তারা জানান, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ, ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে মানুষকে ঘরমুখী করা, বাজার মনিটরিং, লকডাউন ও করোনা পজেটিভ রোগীদের হোমকোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিন সকাল থেকে রাত পযন্ত সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতে হয়েছে। এ জন্য অফিসের
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ওমেদার সোহাগ ঘুষ চাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, তিনি অফিসে আসার ৪ ঘন্টা আগে এসিল্যান্ড স্যারের নির্দেশে আমি সকালে এ ফাইলটি ইউএনও স্যারের অফিসে দিয়ে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) আল মামুন জানান, বিষয়টি সার্ভেয়ার পর পর দুইবার পরিদর্শন করে নাল জমি হিসেবে রিপোর্ট দিলে আমি নাল জমি হিসেবে বন্দোবস্ত দেয়া যেতে পারে মর্মে সুপারিশ করে ১৬ জুলাই সকালে ফাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছি। আমি কেন নাল জমিকে ডোবা লিখলাম না বলে তিনি অনেক লোকের সামনে আমাকে অশালিন কথাবার্তা বললে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহেবকে আমি যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করেছি। উনাকে বের করে দেয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। এসিল্যান্ড জানান, রেকর্ড অনুযায়ী এবং সার্ভেয়ার তদন্ত করে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন সেখানে জমির শ্রেণি নাল উল্লেখ করেছেন। নালকে ডোবা বানানো আমার পক্ষে সম্ভব নয় বলতেই তিনি রেগে যান। তবে কেউ তাঁর কাছে ঘুষ চেয়েছে এমন অভিযোগ তিনি আমার নিকট জানাননি এবং ঘুষ দাবির ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।
আপনার মতামত জানান