সংঘর্ষের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

প্রকাশিত

সংবাদ প্রকাশের জের ধরে শাহজালাল নামের এক সাংবাদিককে হত্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শাহজালাল নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।


পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে গত শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে হাজী আলাউদ্দিন গ্রুপ ও সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় গত শনিবার হাজী আলাউদ্দিন গ্রুপের সমর আলী ও রোববার সাদেক গ্রুপের আলী আহম্মদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ঘটনার পর সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। হাজী আলাউদ্দিন গ্রুপের নিহত সমর আলীর ভাই আব্দুল আলী বাদী হয়ে ১৭ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার সোনারগাঁ প্রতিনিধি শাহজালালকে আসামী করা হয়। সাংবাদিক শাহজালাল প্রতিকার চেয়ে গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলমের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

শনিবার একটি ফেসবুক লাইভে দেখা যায়, সমর আলীর বোন সহ গ্রামের সব মহিলারা বলছিলেন, গতরাতে অর্থাৎ শুক্রবার রাতে শাহজালাল সংবাদ সংগ্রহের জন্য নয়াগাঁও আসলেও যেদিন সমর আলী খুন হয় সেদিন (শনিবার) শাহজালাল নয়াগাঁও গ্রামে একটি বারের জন্য যাননি বলে অভিযোগ করেন। তবে কেন সাংবাদিক শাহ জালালকে হত্যা মামলার আসামী করা হল এ প্রশ্ন সাংবাদিক মহল সহ সকলের।

এ ব্যাপারে সাংবাদিক শাহজালাল জানান, শুক্রবার রাতে যখন দফায় দফায় হাজী আলাউদ্দিন ও সাদেক মোল্লা গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছিল এবং হামলায় সাদেকুর রহমান নামের একজন মারাত্মকভাবে জখম হওয়ার খবর পেয়ে আমি রাতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে যাই।পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেদিন হাজী আলাউদ্দিনের একটি সশস্ত্র বাহিনী তার বিল্ডিয়ের ছাদে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানতে পেরে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি। অনেকের সামনে পুলিশকে অস্ত্রের বিষয়টি জানাতেই হাজী আলাউদ্দিনের বাহিনী আমাকে আটক করতে চাইলে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে আসে। নয়াগাঁওয়ে দুপক্ষের মারামারির সংবাদ প্রকাশ করা এবং আলাউদ্দিন বাহিনীর অস্ত্রের সন্ধান দেওয়ায় আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে আমার ধারনা।

এ ব্যাপারে সাংবাদিক নেতারা জানান, একজন সাংবাদিক তার পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। সাংবাদিকদের আটক করা, কারাগারে নিক্ষেপ করা, তার দেহ তল্লাশি করা, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যা মামলা দেওয়া, দেশ থেকে নির্বাসন দেওয়া সহ দুর্নীতিবাজ বা পাচারকারীদের শিকার হওয়া এমনকি নানাভাবে প্রলুব্ধ হবারও ঝুঁকি রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ক্যামেরা ভাঙা, ই মেইল, ফেসবুক এবং অনলাইনে ট্রলসের মাধ্যমেও সাংবাদিকরা হুমকির মধ্যে পড়ছেন। সর্বত্র ডিজিটাল হয়রানি, সহিংস হামলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ নানা বিষয়ে একজন সংবাদকর্মী বারবার আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন।

সাংবাদিক নেতারা এসব ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সাংবাদিক শাহ জালালের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার আহবান জানান এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন।


আপনার মতামত জানান