শীতে শিশুদের জ্বর-সর্দি থেকে দূরে রাখর উপায়ে

রাতের আকাশে হিম, সকালে শিশির। শীত আসছে। আর এ সময়ে বয়স্কদের পাশাপাশি বাড়ির ছোটদেরও প্রয়োজন বিশেষ যত্নের। এ সময়ে কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করলেই রোগব্যাধি থেকে দূরে থাকা সম্ভব।


ছোটদের ভালো থাকা, তাদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার দায়িত্ব অভিভাবকদেরই। কেমনভাবে এই ঠান্ডার মৌসুমে আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখবেন তা নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।
ভোরের দিকে ফ্যানের স্পিড কমিয়ে ছোটদের গায়ে ও গলায় অবশ্যই হালকা চাদর চাপা দিয়ে দিন। সারা রাত চাদরে শুলেও সমস্যা নেই।


তবে খেয়াল রাখুন বাচ্চা যেন ঘেমে না যায়। তাতে ঘাম বসে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। ভোরে ঘরের জানালাও বন্ধ করে রাখুন। রোদ উঠলে খুলে দিন।

সন্তানকে স্কুলে নেওয়ার সময়ও মাথায় হালকা স্কার্ফ জড়িয়ে দিন।
এই সময় বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম জাতীয় সবজির তরকারি প্রত্যেকের বাড়িতেই তৈরি হয়। বাচ্চাদের রাতের খাবারে এই ধরনের সবজি এড়িয়ে চলুন। বিশেষত সাত বছরের নিচে যাদের বয়স। অনেক সময় এই ধরনের সবজি থেকে পেট গরম, বদহজম হতে পারে।

বমি হলে বাচ্চাকে বারেবারে স্যালাইন খাওয়ান। পানি-মুড়ি, চিঁড়ে-পানি, টক দই খাওয়ানো যেতে পারে। তবে দু-তিনবারের বেশি বমি হলে বা বমি কমতে না চাইলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
তেলমশলা খেয়ে বা অন্য কোনো কারণে ডায়রিয়া হলে বাচ্চাকে বারেবারে পানি, স্যালাইন খাওয়ান। বাড়িতে তৈরি পাতলা খিচুড়ি, হালকা চারা মাছের ঝোল বাচ্চাকে খাওয়ানো যেতে পারে।

এই সময় বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। গোসলের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কোনো ভালো ব্র্যান্ডের বেবি অয়েল বা গোসলের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। পাঁচ বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের ত্বকে কোনোকিছু ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ছোটদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য রোজ ভিটামিন সি যুক্ত ফল-যেমন, কমলালেবু, পাতিলেবু, আমলকী খাওয়ান। ছোটখাটো সর্দি-কাশির মতো সমস্যা এতে প্রতিরোধ হবে। ছোটদের প্রতিদিন দুয়েক রকমের মৌসুমি ফল খাওয়ান।

সন্তান পড়ে গিয়ে কোথাও ব্যথা পেলে রাতে শোয়ার আগে এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো একগ্লাস দুধে মিশিয়ে খাওয়ালে উপকার পাবেন। বাচ্চার যদি ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে অথবা অ্যাজমার সমস্যা থাকে, তাহলে শীত ভরপুর আসার আগে সিজন চেঞ্জের সময় বিশেষ যত্নে রাখুন এবং অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। হাঁপানি বা ডাস্ট অ্যালার্জির প্রবণতা থাকলে মাস্ক ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। বিশেষত বাচ্চারা মাঠে খেলতে যাওয়ার সময় বা স্কুলে যাতায়াতের পথে মাস্ক পরিয়ে দিন।

ঠান্ডা লেগে জ্বর এলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ খাওয়াবেন না। দু-দিনের বেশি জ্বর থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। জ্বরে মুখে অরুচি হলে বাচ্চা যা খেতে চায় তাই দিন, তবে তেল-ঝাল-মশলা বেশি পরিমাণে খাওয়াবেন না। মুখরোচক কিছু খেতে চাইলে বাড়িতে বানিয়ে দিন। যেমন, স্টাফড পরোটা, এগরোল, স্যান্ডউইচ, চিঁড়ের পোলাও বাচ্চাকে দেওয়া যেতে পারে।

সর্দি-কাশি-গলা ব্যথা হলে বাচ্চাকে স্কুলে না পাঠানোই ভালো। এর থেকে অন্য বাচ্চাদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে। রাতে শোয়ার আগে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে দিন। মসকুইটো রেপেলেন্ট যাতে ঘরে সারাক্ষণ না জ্বলে সেদিকেও নজর দিন।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন