লোকজ উৎসবে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মাসব্যাপীর এই উৎসবে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। ১৬ জানুয়ারি এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই মেলা ও উৎসব।
গতকাল সকাল থেকেই উৎসবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। সাধারণ দর্শনার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ দেখা গেছে। গতকাল দর্শনার্থীর ভিড় বেড়েছে। মেলার প্রতিটি স্টলে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলেছেন, বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়েছে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি লোকের সমাগম হয়েছে। ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক এ কে এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, দিন যাচ্ছে আর মেলায় দর্শনার্থীর ভিড়ও বাড়ছে। শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের পদচারণে মুখরিত কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব প্রাঙ্গণ।
১৬ জানুয়ারি স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত এই উৎসবের উদ্বোধন করেন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই মেলা ও উৎসব।
লোকজ মেলায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে ছেলেমেয়েদের নিয়ে লোকজ মেলায় এসেছি। তাদের একতারা, বাঁশি, বায়োস্কোপ, কাঠের পুতুল, নকশিকাঁথাসহ আমাদের আদি ও অকৃত্রিম শিল্পের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং লোকগান শুনতে মেলায় এসেছি।’
মেলায় আসা লিটন মাহমুদ বলেন, ‘মাটি, বাঁশ-বেত ও তামা-কাঁসার সামগ্রী কিনতে সোনারগাঁয় এসেছি। তবে মুড়ি, মুড়কি, খই ও জিলাপির দোকানে বেশি ভিড় দেখা গেছে।
‘মেলায় আসব, আর জিলাপি খাব না, এটা কেমন কথা,’ বলেই হাসলেন বাচ্চু সরকার।
লোকজ এই উৎসবে দেশের প্রথিতযশা কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে রয়েছে ‘কর্মময় কারুশিল্প প্রদর্শনী’। প্রদর্শনী গ্যালারিতে নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করছে সোনারগাঁর দারুশিল্পের কারুকাজ, নকশীকাঁথা, বিলুপ্তপ্রায় সোনারগাঁর এক কাঠের হাতি-ঘোড়া, মমি পুতুল, শখের হাঁড়ি, রাজশাহীর মৃিশল্প, ঝালকাঠির শীতলপাটি, মণিপুরি তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, মাগুরার শোলাশিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁর জামদানি, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কিশোরগঞ্জের টেপা পুতুল, কক্সবাজারের শাঁখা-ঝিনুক শিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কাঁথা, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, গাজীপুরের পাট, ছন, তালপাতা, বাঁশের পর্দা, ছনের ঝুড়ি, পাটের জুতার কারুপণ্য, লোকজ অলংকার, রিকশাচিত্র ও পুতুলনাচ।
আপনার মতামত জানান