রক্তাক্ত কুকুরের ভিডিও শেয়ার করে জয়া আহসানের হৃদয়স্পর্শী স্ট্যাটাস

প্রকাশিত

দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রাণিপ্রেম সবারই জানা। বাসায় বিড়াল-কুকুর লালন-পালন করেন। যে কোনো প্রাণীর প্রতি তার আলাদা দরদ কাজ করে। বিভিন্ন সময়ে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে তার কাছ থেকে। করোনাকালে লকডাউনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরকে খাওয়াতে দেখা গেছে এ অভিনেত্রীকে।

সম্প্রতি লালমনিরহাটের আদিতমারীতে একটি কুকুরকে ছুরিকাঘাতের ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন জয়া আহসান। পোস্টে তিনি লিখেছেন— এই ভিডিওটি দেখে আমার ভাষা হারিয়ে গেছে। আমরা কি মানুষ! এ আমাদের আচরণ! একটা নিরীহ প্রাণীর ওপর এত চরম নিষ্ঠুরতা করতে আমাদের এতটুকু বুক কাঁপল না?

এই সেদিনও দেখেছি— একটা মা মেছো বাঘকে তার চোখ না ফোটা তিনটি শিশুর সঙ্গে কিছু মানুষ উল্লাসের সঙ্গে পিটিয়ে মারছে। যেন একটা প্রতিযোগিতায় নেমেছে সবাই, কে কত নিষ্ঠুর হতে পারে।

এই ভিডিওর কুকুরটি লালমনিরহাটের আদিতমারীর। সবার বড় আদরের কুকুর। একটা কসাইয়ের দোকানের সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল সে। কেন দাঁড়িয়ে ছিল, তারই শাস্তি হিসেবে ছুরি দিয়ে ওকে এ ফোঁড়–ওফোঁড় করে দেওয়া হয়েছে। অতিনিষ্ঠুর এ ঘটনাটি চোখে পড়ার পর এলাকাবাসী ওর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে। ঢাকায় প্রাণীকল্যাণ আর অধিকার নিয়ে কাজ করেন রুখসাথ হক আপা আমাকে বিষয়টি জানান, আমরা ঠিক করি উন্নত চিকিৎসার জন্য কুকুরটিকে ঢাকায় নিয়ে আসব। আনার আগেই জানতে পারি চিকিৎসা পেয়ে এখন সে আরোগ্যের পথে। আশা করি, ও দ্রুতই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে।

যে কসাই কুকুরটিকে নিষ্ঠুরভাবে ছুরিকাহত করেছিল, আদিতমারী পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।

তবে চমকপ্রদ একটা খবর পেলাম গতকাল। ঘটনাটি আরও নজরে এসেছিল পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী জিশান মির্জার। অসহায় প্রাণীর ওপর এমন নিষ্ঠুরতায় তিনি উৎকণ্ঠিত হয়ে ওঠেন। এর পর ২০ মে সেই কসাইকে খুঁজে প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯-এর আওতায় সোপর্দ করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি আটক আছেন। এমন মানবিক একটি উদাহরণ আমাদের দারুণ উৎসাহিত করেছে। ধন্যবাদ, জিশান মির্জা। ধন্যবাদ, আদিতমারি পুলিশ।

এমন শাস্তি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে জয়া আরও লেখেন— আমরা প্রত্যাশা করব এটি যেন কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়ে না থাকে। আমরা প্রশাসন, বন বিভাগ এবং দেশের বিভিন্ন থানার প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন প্রাণীদের প্রতি সদয় হোন এবং প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯-এর যথাযথভাবে প্রয়োগ করেন।

প্রাণিজগতের নিরাপদ বাসস্থানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে এই অভিনেত্রী লেখেন— পুরো প্রকৃতি আর প্রাণিজগৎ নিয়েই আমরা মানুষ। সবাইকে নিয়ে পৃথিবীকে আমরা আনন্দময় কে তুলি। আমরা আরেকটু মানবিক হই, প্রাণবিক হই। সূত্রঃ যুগান্তর।

আপনার মতামত জানান