মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের উপর নির্যাতনের অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের উপর বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালকের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আজ সকালে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের কারুপল্লিতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা জামালউদ্দিন মন্টু মিয়া তার দুই ছেলেকে নিয়ে ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের কারুপল্লীতে কারুশিল্প প্রদর্শন ও বিক্রয় করে আসছিলেন। তিনি ২০২০ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার দাফন সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের দোকান ছেড়ে দিতে বলে। এ ব্যাপারে পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ্ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে কারুশিল্পী হিসেবে আবেদন করতে বলেন। তবে অবশ্যই কারুশিল্পী হতে হবে। প্রয়াত বীর মুি যোদ্ধা মন্টু মিয়ার মেয়ে আলেয়া আক্তার একজন স্বীকৃত কারুশিল্পী। সে আবেদন করলেও নতুন করে কারুপল্লীতে দোকান বরাদ্ধ পাননি। আজ প্রথম রমজানের দিন সকালে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ ৩০-৩৫ জন আনসার সদস্য সহ যাদুঘরে কর্মরত কর্মচারীদের নিয়ে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মন্টু মিয়ার দোকানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে গালিগালাজ, মারধর এবং ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দোকান থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পরিচালকের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা মন্টু মিয়ার ছেলে সিরাজ জানান, সকালে পরিচালক আমার দোকানে এসেই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও চরথাপ্পর মারতে থাকে এবং আমাকে ঘাড়ধরে দোকান থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
মুক্তিযোদ্ধা মন্টু মিয়ার মেয়ে আলেয়া আক্তার বলেন, আমি যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষিত ও বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত কারুশিল্পি। আমার পিতার স্মৃতিরক্ষা ও ভাইদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বনকে রক্ষা করতে এবং আমার তৈরি কারুপণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ের জন্য আবেদন করি। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে এসে যাদুঘরের পরিচালক আমার ভাইয়ের উপর নির্যাতন চালায় এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বলে মরে গেছে তো মুক্তিযুদ্ধও শেষ হয়ে গেছে। আমি এর সুবিচার চাই। অন্যথায় আমরা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড মানববন্ধন সহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি শুধু দোকান থেকে বের করে তালা ঝুলিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। তাছাড়া যার নামে দোকান বরাদ্ধ সে মারা গেলে বরাদ্ধ বাতিল হয়ে যায়।
আপনার মতামত জানান