বিএনপি নেতা মনির, সাখাওয়াত, রাজিবসহ ৯ নেতার জামিন
পুলিশকে লাঞ্ছিত মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খানসহ ৯ নেতার উচ্চ আদালতে জামিন ।
বুধবার ( ১৮ ডিসেম্বর ) দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি ইজারুল আকন্দের দ্বৈত বেঞ্চে আগাম জামিন লাভ করেন তারা ।
আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুপ্রিম আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. জয়নাল আবেদীন ও এড. মাহবুবুর রহমান খান ।
আসামিরা হলেন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব (৪২), মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হাসান ইউসুফ টিপু (৪৮), জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি (২৮), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া (৩৫), সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম ছক্কু (৪০), জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার (৪৮), মঞ্জু (৪৫), মাহমুদুল হাসান লিংকন ((৩৬)।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার ( ১৬ ডিসেম্বর ) বিজয় দিবসের র্যালি থেকে পুলিশের উপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা প্রদান, যানবাহন চলাচলে বাধা, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করাসহ আরো কয়েকটি অভিযোগ তুলে বিএনপির ১৯ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ছাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ (৪৮), মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে (৫৫) নিজবাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া মামলায় উল্লেখিত ঘটনাস্থল থেকে আটক ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তারা হলেন, নুর এলাহী সোহাগ ওরফে রাকিব (৩৭), মো.স্বপন মিয়া (২০), মো.কামরুল হাসান (২৯) এবং মামুন (২০)। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি হিসেবে হোসেন কাজলকে নামে এক বিএনপি কর্মীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মামলায় নাম থাকা অন্য আসামিরা হলেন, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খোরশেদ (৪০), জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির (৫০), জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব (৪২), মহানগর বিএনপির সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান (৫২), সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হাসান ইউসুফ টিপু (৪৮), যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল (৪৮), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া (৩৫), সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম ছক্কু (৪০), জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি (২৮), জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার (৪৮), মঞ্জু (৪৫), আকরাম প্রধান (৪৮), মাহমুদুল হাসান লিংকন ((৩৬)। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০০ থেকে ৩০০ জনকে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান।
এদিকে এই মামলায় গ্রেপ্তার জেলা ও মহানগর বিএনপির সেক্রেটারিসহ ৭ আসামিকে সাত দিনের রিমা- চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত আসামিদের রিমা- ও জামিন শুনানির তারিখ আগামী ১৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন। কোর্ট পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা প্রসঙ্গে বাদী এসআই ছাইফুল ইসলাম বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের দুই নম্বও রেলগেইট এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে বেআইনিভাবে একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা রাস্তার যানবাহন চলাচলে বাধা দিয়ে ভাঙচুর করছে এমন সংবাদে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিরা পুলিশের সাথে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন। এ সময় আমাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ সরকারি অস্ত্র ও গুলি ছিনিয়ে নেওয়া চেষ্টা করে। এসময় আমিসহ (ছাইফুল ইসলাম) পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত প্রাপ্ত হই। পরে পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ সময় চারজনকে আটকসহ ঘটনাস্থলে থেকে বাঁশের লাঠি, ভাঙা ইটের টুকরো জব্দ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে আটকদের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্য আসামিদের জড়িত থাকর ব্যাপারে জানতে পেরে মামলা দায়ের করি।
আপনার মতামত জানান