বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিমের জমি দখলের পায়পাতারা করছে বিএনপি নেতা দুলালগং। বিরোধীয় জমি নিয়ে আদালতে মামলা থাকলেও দখলের চেষ্টায় মরিয়া এ চক্রটি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে। পুলিশের সহায়তায় রক্ষা পেলেও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যের হত্যা ও গুম করার হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কাদিরগঞ্জ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী ফজলুল করিমের ভিটা বাড়ী থেকে জোরপূর্বক ও বলপ্রয়োগে বেদখল করে বহুতল পাকা ভবন নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে স্থানীয় বিএনপি নেতা দুলালগং। জমি দখলে বাঁধা দিলে বিএনপি নেতা দুলালের(৫০) নেতৃত্বে তার ভাই বিল্লাল(৪৬), মোঃ হালিম (৩৩), মোঃ হানিফা (৩০) ও তার ছেলে রাকিব মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর অর্তকিত হামলা চালায়। হামলার শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজ্বী ফজলুল করিম ও তার একমাত্র ছেলে মাহবুব মারাত্মকভাবে আহত হয়। এ সময় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশের সহযোগিতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ছেলে প্রাণে বেঁচে যান। বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং আন্তব আলীর ছেলে ফজলুল হক গং এর মধ্যে দেওয়ানি আদালতে একটি মামলা চলছে। মামলা চলাকালীন সময়ে বিএনপি নেতা দুলাল মিয়া বিরোধীয় সম্পত্তিতে জোড়পূর্বক বাড়ি নির্মাণ করছে। দখলে বাঁধা দিতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে , চর রমজান সোনাউল্যা মৌজা স্থিত , এস,এঃ ১৭০ ও ২১২ , আর,এসঃ ১৯১ ও ১৯২ , দিয়ারাঃ ৮৩২,৮৩৩,৮৩৪,৮৩৮ ও ৪১৫ নং খতিয়ানভুক্ত ; এস,এঃ ২১৩০,২০১৪,২০১৫,১৮২০,১৮২১; আর,এসঃ ৪৬৯৯, ৪৫৮৯, ৪৫৪৮, ৪৫৪৯, দিয়ারাঃ ৬৫৩০, ৬২৪৭, ৩৮৭৮, ৩৯০১, ৩৯০০, ৩৯০২,৩৯০৩ নং ইত্যাদি দাগে মোট ১৪৫ শতাংশ ভূমির মধ্যে মামলার বিবাদী ফজলুল হক গং এর পিতা আন্তাব আলী ৪৮.৩৩ শতাংশ জমির মালিক থাকা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে মামলার অন্তর্ভুক্ত নালিশা জমিতে তার উত্তরাধিকারীগণ তথা ফজলুল হক গং বিভিন্ন দলিল মূলে ভুক্তভোগী বাদীদের অনুকূলে বিক্রি করে নিঃস্বত্ববান হন।
নালিশা জমিতে বিবাদীরা তাদের কোন স্বত্ত্ব নাই জেনে মামলার শুনানিতে আদালতের সমন পেয়ে গয়রে হাজির থেকে মামলার অগ্রগতিকে বাঁধাগ্রস্ত করতে শুরু করে এবং আইন বহির্ভূত পন্থা অবলম্বনের অপচেষ্টা চালায়।
চর রমজান সোনাউল্যা মৌজা স্থিত (আর,এস দাগ- ১৯১ ও ১৯২) ভূমিতে জোরপূর্বক বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে। বিএনপি নেতা দুলাল গং আইনের ফাকফোকর খুজে বের করে প্রতারণার আশ্রয় নেয়। প্রতারনামূলকভাবে আদালতের মাধ্যমে দেওয়ানি মামলাধীন নালিশা জমিতে ১৪৫ ধারার মামলা রুজু করে ভোগ দখলে বাঁধা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চালায় যেখানে তাদের কোন স্বত্ব এবং দখল নেই।
করোনাকালীন সময়ে আদালত বন্ধ থাকার সুযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিমের ভোগদখলীয় জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে বিএনপি নেতা দুলাল গং। এবং এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় স্থানীয় সালিশের নির্ধারিত তারিখে অনুপস্থিত থেকে শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নৌ-কমান্ডো হাজী ফজলুল করিম কান্নাজড়া কণ্ঠে আক্ষেপ করে বলেন , ‘একাত্তরে যে মাটিকে রক্ষা করার জন্য জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছি, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সেই মাটি থেকেই আমাকে উৎখাত করতে উঠেপড়ে লেগেছে জামায়াত বিএনপি’র সেই স্বাধীনতা বিরোধীরা। আজ স্বাধীনতার পক্ষের দল ক্ষমতায় থাকলেও আমি আজ স্বাধীনতা বিরোধীদের কাছে কতটা অসহায় তা ভাবলে বড় কষ্ট হয়।
আপনার মতামত জানান