বসতভিটা দখলের প্রতিকার চাওয়ায় চাঁদাবাজীর মামলা

প্রকাশিত
ভূক্তভোগী দিনমজুর আমির আলী


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নুনেরটেক গ্রামের অসহায় দিনমজুর আমির আলীর বসতভিটা দখল করে স্থাপনা নির্মানের প্রতিবাদ করায় হামলা ও চাঁদাবাজীর মামলা দিয়ে গ্রামছাড়া করার পায়তারা করছে প্রভাবশালী সংঘবদ্ধ চক্র। প্রভাবশালীদের হুমকিতে বাড়ী ছাড়া হয়ে হামলা মামলা ও প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অসহায় এ দিনমজুর।

জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক গ্রামের নান্দু মিয়ার ছেলে সামসুল হক প্রতিবেশী দিনমজুর আমির আলীর বসত ভিটা দখল করে ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর একটি দালান নির্মাণ কাজ শুরু করে। এ সময় আমির আলী তার বসতভিটা ছেড়ে সামসুল হকের নিজস্ব জমিতে দালান নির্মান করতে বলে। তার বাধা না শুনলে আমির আলী গ্রামের মাতবর, সোনারগাঁ থানা ও সবশেষে আদালতের স্মরণাপন্ন হন। সোনারগাঁ থানা পুলিশ সরেজমিন তদন্ত করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেন। কিন্তু সামসুল হক থানার নিষেধাজ্ঞা আমলে না নিয়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে গেলে আদালত কারন দর্শানোর নোটিশ জারি করে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করে। আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সে নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখে ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজীর অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের পেক্ষিতে সোনারগাঁ থানা পুলিশকে সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে তদন্ত রির্পোট প্রদান করতে নির্দেশ দেন আদালত। সেই পেক্ষিতে সোনারগাঁ থানার উপপরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম রহস্যজনকভাবে ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে চাঁদাদাবীর সত্যতা পেয়েছেন মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে আদালত ভুক্তভোগী আমির আলী ও তার দুই সন্তানের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজীর মামলা গ্রহন করেন।

ভুক্তভোগী আমির আলী বলেন, প্রভাবশালী এ অপরাধী চক্রের প্রাণনাশের হুমকিতে আমি এখন ঘরছাড়া। জীবনের নিরাপত্তায় নিজ গ্রাম ছেড়ে যাযাবরের মতো খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রভাবশালী একজনের নেতৃত্বে সামসু ও আহসানের দখল দারিত্বের বিরুদ্ধে প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে প্রতিকার চেয়েও সুবিচার পাইনি। উল্টো আমার ও আমার দুইছেলের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করে। বর্তমানে আমি ওই মামলায় জামিনে আছি। আমি এই সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে এখন নিজেই চরম বিপদের মধ্যে রয়েছি। গতকাল রাতে দখলদার সামসুল হক তার নিজ বাড়িতে ককটেল ফুটিয়ে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে এবং আমি ও আমার দুই সন্তান তার বাড়িতে ডাকাতি করেছি বলে গ্রামবাসীকে জানায়। ওই সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের ভয়ে আমি নিজ গ্রামেও যেতে পারছি না।

সামসুল হকের বাড়িতে ডাকাতির ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয়রা জানান, কখন ডাকাত এসেছে, কখন চলে গেছে তাদের পরিবার ছাড়া গ্রামের কেউ বলতে পারবে না। তবে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুনে আমরা এগিয়ে গেলে শুনি ডাকাত চলে গেছে।

এ ব্যাপারে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল জানান, গতকালের বোমা বাজীর ঘটনাটি সাজানো ও মিথ্যা। আমির আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রনোদিত।

সোনারগাঁ থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, গতকাল রাতে নুনেরটেক গ্রামে বোমা ফাটিয়ে ডাকাতির বিষয়ে একটি অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আপনার মতামত জানান