প্রকল্পের মেয়াদ শেষ, ঘর পায়নি গৃহহীনরা

প্রকাশিত

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :>
কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নিমার্ণ হয়নি গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ঘর। এঘটনায় সুবিধাভোগীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। ঘর নিমার্ণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ইউপি চেয়ারম্যানদের বারবার তাগিদ দিলেও কোন কাজ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে দীর্ঘদিনেও এসব ঘরের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।


সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ইং অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৭২জন গৃহহীনদের জন্য দুযোর্গ সহনীয় ঘর নিমার্ণের ২ কোটি ১৫ লাখ ৮৯ হাজার ২০টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২রুম বিশিষ্ট প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নে ৪টি, দলদলিয়ায় ৬টি, দুগার্পুরে ৭টি, পান্ডুলে ৮টি, বুড়াবুড়িতে ৩টি, ধরণীবাড়িতে ১০টি, ধামশ্রেনীতে ৪টি, গুনাইগাছে ৬টি, বজরায় ৫টি, হাতিয়ায় ৮টি, তবকপুরে ৭টি, বেগমগঞ্জে ২টি, ও সাহেবের আলগায় ২টি ঘর।


ইতোমধ্যে গতবছরের ১৯ মে তারিখে বরাদ্দের প্রথম কিস্তির ১কোটি ৭লাখ ৯৪ হাজার ৯৬০ টাকা উত্তোলন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও বুড়াবুড়িতে ৩টি, তবকপুরে ৭টি ও ধামশ্রেনী ইউনিয়নের ৪টি ঘরের নিমার্ণ কাজ শেষ হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতার কাছে প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য বার বার লিখিতভাবে জানালেও কোন কর্ণপাত করেননি তারা। তবে ইতোমধ্যে ধামশ্রেনী ইউনিয়নের কাজ শুরু হলেও তা এ পর্যন্ত শেষ হয়নি।

তবকপুর সরদারপাড়া গ্রামের রেজিয়া বেওয়া বলেন, ‘৬ মাস আগে চেয়ারম্যানের লোকজন কিছু ইট এনে পিড়ালী (ভিত্তিপ্রস্তর) করে দিয়ে গেছে আর কোন খোঁজ নেই। বার বার তাদের কাছে গিয়েও কাজ হয়নি। এই শীতে ছাওয়াপোওয়া নিয়ে কি যে কষ্টে আছি’।


বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামের মজিবর আলীর স্ত্রী জাহেরা বেগম বলেন, ৫-৬ মাস আগে ইটের গাঁথুনী দিয়ে কাজ বন্ধ করে রাখছে। চেয়ারম্যানের কাছে ধরণা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ভাঙা ঘর-বাড়িতে খুব কষ্ট আছি। এই ঘর যে কবে হবে আল্লাহ জানে।


ধামশ্রেনী ইউপি চেয়ারম্যান রাখিবুল হাসান সরদার বলেন, ভাল ইট না পাওয়ায় ঘরের কাজ অল্প সময়ের জন্য বন্ধ ছিল। তবে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে।

প্রকল্পের সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদৌল্লা বলেন, অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এরপরও তারা কাজ শেষ করতে পারেননি।

প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নিবার্হী অফিসার নুর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, ‘তবকপুরের চেয়ারম্যানকে তো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। বুড়াবুড়িতে কাজ শুরু হওয়ার কথা। তবে চুড়ান্ত বিল এখনও দেয়া হয়নি। আমি চিন্তা করছি এসব কাজ আমি নিজেই করে দেব।’

আপনার মতামত জানান