তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমরানের অটোর চাকার সাথে ঘুরবে কি ভাগ্যের চাকা ?
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনেই একটি অটোরিক্সা দাঁড়ানো। ভেতরে ক্লাস হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের হইচই আর কোলাহলে মুখরিত বিদ্যালয় চত্বর। করোনাকালীন সময়ের কারনে শিফট করে চলে লেখাপড়া। স্কুল ছটির পরই তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বই হাতে অটো রিক্সার চালকের আসনে বসেই রিক্সার সুইচ অন করে রাস্তার পেরিয়ে চলে গেল। পরে জানা গেল সনমান্দী ইউনিয়ন এর চরভোলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ ইমরান।
সহপাঠীরা যখন স্কুল ছুটি হওয়ার পর খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে তখন ইমরান সংসারের দায় মাথায় নিয়ে অটোরিকশা চালায়। অটোরিকশা চালিয়ে যা উপার্জন করে তা দিয়ে সে সংসারের খরচ ও তার শিক্ষার খরচ বহন করে। প্রায় সময় সে গাড়ি নিয়ে স্কুলে এসে ক্লাস করে আবার ক্লাস শেষ করে গাড়ি চালাতে শুরু করে।
ইমরানের এই ইচ্ছে শক্তি ও প্রচেষ্টার প্রসংশা করেছেন এলাকার সবাই। সনমান্দী ইউনিয়নের বড় খৈতেরভোলা মো. ফুলমিয়ার ছেলে ইমরান। ইমরান এর বড়ভাই ৫ ম শ্রেনীর ছাত্র। অটো চালিয়ে দুই ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে সংসারে দায়িত্ব বহন করছে সে। অভাব অনটনের কারনে ইমরানের বাবা তাকে এই অটো গাড়ি টি কিনে দিয়েছে। অলিপুরা থেকে বারদী রাস্তা দিয়েই তার চলাচল।
ইমরানের বাবা বলেন এই বয়সে গাড়ি চালানো টা অনেক ঝুঁকি। কিন্তু আমি বাবা হিসেবে ব্যর্থ। সংসারের অভাব গুছাতে আমার ছেলে আমাকে কারো কাছে হাত পাততে দেয়নি।
চরভুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেকুজ্জামান জীবন বলেন, ইমরানের ইচ্ছে শক্তি ও অধম্য সাহসই তাকে সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায় পৌঁছে দিবে বলে আমার বিশ^াস। তবে এ বয়সে অটোরিক্সা চালানো তার জন্য খুবই আশংকার। তাই আমি উপজেলা প্রশাসন, সনমান্দী ইউনিয়ন ও সোনারগাঁ উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, ইমরানের পরিবারের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে শিশু শ্রম বন্ধ করে তাদের লেখাপড়ার সুযোগ দিতে আহবান জানান। ইমরান ও তার পরিবারের সকলের জন্য শুভকামনা শুভ কামনা জানান।
আপনার মতামত জানান