জাহান্নাম থেকে মুক্তির তিন আমল

প্রকাশিত

মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলাকে ভয় করবে তুমি যখন যেভাবেই থাকো না কেন। আর মন্দ কাজ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে নেক কাজ করবে। কেননা নেক কাজ মন্দকে মুছে ফেলে। আর মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৭)

আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) মুমিনদের আল্লাহভীতিতে উদ্বুদ্ব করেছেন এবং মন্দ কাজের প্রতিবিধান হিসেবে নেক কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

#আল্লাহভীতির পরিচয় : তাকওয়া তথা আল্লাহকে ভয় পাওয়ার অর্থ হলো আল্লাহর আদেশগুলো বাস্তবায়ন এবং নিষেধগুলো পরিহার করার মাধ্যমে তোমার ও আল্লাহর শাস্তির মধ্যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। আলী (রা.)-কে তাকওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘তাকওয়া হলো আল্লাহর ভয়, পবিত্র কোরআন অনুযায়ী আমল, অল্পে পরিতুষ্টি, মৃত্যুদিনের প্রস্তুতি।’ (আদাবুল ইসলাম : ১/১২)

প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে আল্লাহর ভয় : বান্দার জন্য প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য উভয় অবস্থায় আল্লাহকে ভয় পাওয়া ওয়াজিব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহকে ভয় কোরো তুমি যেখানেই থাকো না কেন; যেখানে মানুষ তোমাকে দেখে ও যেখানে মানুষ তোমাকে দেখে না।’ (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ১৯/১৭)#

মহানবী (সা.)-এর তাকওয়া প্রার্থনা : আল্লাহর কাছে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সর্বাবস্থায় আল্লাহভীতির জন্য দোয়া করতেন মহানবী (সা.)। তিনি বলতেন, “আমি আপনার কাছে ‘আপনার ভয়’ প্রার্থনা করছি গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় থেকে।” (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩০৫)

জাহান্নাম থেকে মুক্তির তিন আমল : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিনটি জিনিস পরিত্রাণকারী ও তিনটি জিনিস ধ্বংসকারী। পরিত্রাণকারী জিনিসগুলো হচ্ছে—১. প্রকাশ্য ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করা, ২. সন্তুষ্ট ও অসন্তুষ্ট উভয় অবস্থায় ন্যায়বিচার করা, ৩. ধনী ও দরিদ্র উভয় অবস্থায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। আর ধ্বংসকারী জিনিসগুলো হচ্ছে—১. প্রবৃত্তির অনুসারী হওয়া, ২. লোভ-লালসা করা, ৩. কোনো ব্যক্তির নিজেকে নিজে সম্মানিত মনে করা। আর এই স্বভাবটি সবচেয়ে খারাপ। (ফতহুল কাবির, হাদিস : ৩৪৭১)

আল্লাহভীতির পার্থিব তিন পুরস্কার : পরকালীন মুক্তি ছাড়াও আল্লাহভীতির পার্থিব পুরস্কারও রয়েছে। কোরআনে বর্ণিত এমন তিনটি পুরস্কার হলো—

১. জীবনকে সহজ করে : আল্লাহভীতি পার্থিব জীবনকে সহজ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দেবেন।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ৪)#

২. মর্যাদা বৃদ্ধি করে : তাকওয়া আল্লাহর কাছে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানী, যে আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভয় করে।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১৩)#

৩. উত্তম প্রতিদান লাভ : আল্লাহভীরু পরকালে জান্নাত এবং পার্থিব জীবনেও তাকে পুরস্কৃত করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘শুভ পরিণতি খোদাভীরুর জন্য।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১২৮)

সূত্রঃ কালেরকণ্ঠ।

আপনার মতামত জানান