জমে উঠেছে সোনারগাঁয়ের লোকজ মেলা
ডেইলি সোনারগাঁ >>
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে প্রতিবছরের ন্যায় এবার ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় লোকজ মেলা। শুক্রবার ছুটির দিনে হাজারো ক্রেতা দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল মেলা প্রাঙ্গণে। বিদেশী পর্যটকরাও মেলায় আসছে। মেলাকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে ফাউন্ডেশন ও এর আশপাশ এলাকা।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে সোনারগাঁয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশ লোককারুশিল্প ফাউন্ডেশন। এবারের মেলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু লোকজ উৎসব’ হিসেবে পালন করছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান। মাসব্যাপী আয়োজনের প্রতিদিনই জমজমাট থাকে মেলা চত্বর।
মেলা উপলক্ষে পুরো ফাউন্ডেশন চত্বর এক ভিন্ন সাজে সাজানো হয়েছে। লাল নীল বাতি দিয়ে মালার মতো করে জড়িয়ে দেয়া হয়েছে জাদুঘরের ভবনগুলোর ইটের তৈরি শরীরে। ফাউন্ডেশনের মূল আঙিনায় থেকে মেলার দিকে ধাবিত রঙিন পতাকায় শোভিত রাস্তার ধারে বিভিন্ন গ্রামীণ শ্লোক, নীতিকথাসংবলিত প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, লোকজীবনের চিত্রকলার ম্যুরাল সাজানো হয়েছে।
গ্রামীণ মেলার চেহারা দারুণ উপভোগ্য। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা লোকশিল্পীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রদর্শন করা হয় জীবন্ত শিল্পকর্ম। ৩২ টি স্টল ঐতিহ্যবাহী এক একটি শিল্পের প্রতিনিধিত্ব করে। আলাদা আলাদা স্টলে মৃৎশিল্প, কাঁসা-পিতল শিল্প, শঙ্খ শিল্প, নক্সিকাঁথা সুচিশিল্প, শীতলপাটি, শোলা শিল্পসহ অন্যান্য বিলুপ্ত প্রায় শিল্পের নিদর্শন। বংশ পরম্পরায় কাজ করে যারা নিজের শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তারাই মেলায় প্রদর্শনিতে অংশ নিয়েছেন। লোকজ মঞ্চে বাউল শিল্পীরা পরিবেশন করেন জারি,শারী, পুথিপাঠসহ দেশের নানা প্রান্তের লোকগীতি।
মেলায় রয়েছে চিরায়ত গ্রামীণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা কারুশিল্পীদের মোহনীয় শিল্প প্রদর্শনী। তাছাড়া মেলার মাঠে আমাদের সমৃদ্ধ অতীত ঐতিহ্যের নিদর্শন মৃৎশিল্প, হাতে তৈরি কাগজ, কারুশিল্প, ঝিনুক-মুক্তার মণিহারি কারুকাজ, নারিকেলের শিল্প, জামদানি শাড়ি তৈরি, নকশিকাঁথা এবং বাঁশ-বেত, শোলা, টেপাপুতুল শিল্পীদের অসাধারণ সব সৃষ্টি।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি ও লোকশিল্পের ঐতিহ্যের নিদর্শনগুলোর সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও লালন করার লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন। লোক ঐতিহ্যের এ মেলায় শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।
আপনার মতামত জানান