চোখ-জুড়ানো পদ্মবিল, মুগ্ধ পর্যটক
গোপালগঞ্জের কলাকইড় বিলে পদ্মের শোভা মুগ্ধ করছে সারা দেশ থেকে আসা পর্যটকদের। পদ্মের অনন্য সৌন্দর্য উপভোগ করতে স্থানীয়দের পাশাপাশি ভিড় করছে পর্যটক ।
জলজ লতাগুল্ম ও পদ্মবনের সবুজ গালিচার মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়ি আছে সাদা ও গোলাপি রঙের অজস্র পদ্ম। বিনোদনপ্রেমীদের অন্যতম প্রিয় স্পটে পরিণত হয়েছে কলাকইড় বিল। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নৌকায় ওঠানামার জন্য একটি পাকা ঘাট, যাত্রীছাউনি ও শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে।
কলাকইড় গ্রামের বাসিন্দা ও করপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বেগ বলেন, ১৯৮৮ সালের বন্যার পর এই বিলে পদ্ম ডাঁটার দেখা মেলে। সেই থেকে বিলের জমিতে দু-একটি করে ফুল ফোটা শুরু। ক্রমে এর পরিধি বাড়তে থাকে। এখন প্রায় দেড় শ থেকে দুই শ বিঘা জমিতে পদ্ম ফুল ফোটে। বোরো আবাদ মৌসুমে জমি পরিষ্কার করে ধান চাষ করা হয়। ধান চাষের পর জমিতে পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে সুপ্ত থাকা পদ্মের বীজ (শালুক) থেকে শাপলার মতো গাছ বের হয়। প্রতিবছর আষাঢ় মাস থেকে পদ্ম ফুল ফোটা শুরু হয়, চলে আশ্বিন মাস পর্যন্ত।
কলাকইড় পদ্মবিলের নৌকাঘাটের সরদার মো. ইয়াছিন বেগ, মিন্টু সরদার, শফিকুল সরদার ও ইকবাল সরদার বলেন, গোপালগঞ্জ জেলা সদর থেকে কলাকইড় গ্রামের পদ্মবিলের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। এর মধ্যে কলাকইড় হাই স্কুল পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার বেশ ভালো পিচ ঢালাই রাস্তা। কিন্তু স্কুল এলাকা থেকে পদ্মবিল পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ইট বিছানো সরু পথ। মাঝে মাঝে খানাখন্দ। এই পথটুকু যাত্রীদের হেঁটে যেতে হয়। ভাঙাচোরা পথটি সংস্কার করা হলে পর্যটকরা স্বচ্ছন্দে আসা-যাওয়া করতে পারবেন।
গোপালগঞ্জ উদীচীর সহসভাপতি ও সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মুন্না বলেন, পদ্মবিলে জলের বুকে যেন পদ্মের মেলা। গত কয়েক বছর সংবাদমাধ্যমে প্রচারের কারণে আর প্রকৃতিপ্রেমী প্রশাসনের প্রচেষ্টায় পরিচিতি পাওয়া এ পদ্মবিল দেখতে এখন প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ভিড় করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, বিল থেকে অনেকে পদ্ম ফুল তুলে নিয়ে যায়, এতে পদ্মবিলের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে।
স্থানীয় নৌকার মাঝিরা বলেন, ‘পদ্ম ফুলের সমাহার আমাদের আয়ের ব্যবস্থা করেছে। পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য দেখার জন্য ২৮টি নৌকা রয়েছে। এতে প্রায় ৬৫ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ’
আপনার মতামত জানান