চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার আসামী ফারুক আব্বাসী গ্রেফতার

প্রকাশিত

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীসহ কয়েকটি হত্যা মামলার আসামি কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ভাওরখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, শীর্ষ সন্ত্রাসী ফারুক সরকার আব্বাসীকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩১ মার্চ) বিকেলে ঢাকার হাজারীবাগ থানার পূর্ব রায়েরবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মেঘনা থানা পুলিশ ও কুমিল্লা ডিবির তত্ত্বাবধানে তাকে কুমিল্লা জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল দুটি মামলায় ওই চেয়ারম্যান উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিনে রয়েছেন। তবে বাদীপক্ষ ওই জামিন বাতিলের জন্য আপিল করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই চেয়ারম্যানের অস্ত্র মামলার আগাম জামিন আপিল বিভাগ স্থগিত করেছেন বলে আমরা জেনেছি। এরপর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য গত দুদিন আমরা তাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখি। বুধবার নিশ্চিত হই, অস্ত্র মামলায় তাকে উচ্চ আদালতের দেওয়া আগাম জামিনটি স্থগিত করা হয়েছে। এরপর অভিযান চালিয়ে তাকে বুধবার বিকেলে ঢাকার হাজারীবাগ থানার পূর্ব রায়েরবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চেয়ারম্যান ফারুক আব্বাসী ভাওরখোলা গ্রামে নাজমা বেগম (৫০) নামে এক নারীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি। এ ছাড়া গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই হত্যাকাণ্ডের দিন তার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় তাকে প্রধান আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। বুধবার ওই অস্ত্র মামলায় কুমিল্লা জেলা ও মেঘনা থানা পুলিশের সদস্যরা ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন।


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিয়াজী আরো জানান, চেয়ারম্যান আব্বাসী বর্তমানে তাদের হেফাজতে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাকে কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

গত ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আব্বাসীর সঙ্গে বিরোধ চলছিল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম সিরাজের। এর জের ধরে ১৯ ফেব্রুয়ারি ভাওরখোলা গ্রামে আব্বাসীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সিরাজ ও তার ভাই আবদুস সালামের ঘরে হামলা চালিয়ে ছয়জনকে কুপিয়ে আহত করে। এর মধ্যে মারা যান সালামের স্ত্রী নাজমা বেগম। এ ঘটনার পরদিন ফারুক আব্বাসীকে প্রধান আসামি করে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের দেবর সিরাজুল ইসলাম।

এ ছাড়া আব্বাসীর বিরুদ্ধে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

মেঘনা থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী ফারুক আব্বাসীর বিরুদ্ধে মেঘনা থানায় দুটি হত্যা মামলাসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাকে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ অন মেঘনা থানার পুলিশ যৌথ অভিযানে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আপনার মতামত জানান