চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যা, চালক গ্রেপ্তার
ঢাকার ধামরাই উপজেলায় বাসে মমতা আক্তার (১৯) নামের এক শ্রমিককে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার ভোররাতের এ ঘটনায় বাসটির চালক ফিরোজ ওরফে সোহেলকে (৩০) গ্রেপ্তার ও বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল শনিবার মমতাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন আসামি সোহেল।
নিহত মমতা আক্তার ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং ডাউটিয়া এলাকার প্রতীক সিরামিক কারখানার শ্রমিক। গ্রেপ্তারকৃত বাসচালক ফিরোজ ওরফে সোহেল রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার খালকোলা গ্রামের আমানত খানের ছেলে ও ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের জেঠাইল গ্রামের জাকির হোসেনের মেয়েজামাই। তিনি শ্বশুরবাড়িতে থেকে প্রতীক সিরামিক কারখানার শ্রমিকদের ভাড়া করা বাস চালাতেন।
নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ডাউটিয়া এলাকায় প্রতীক সিরামিক কারখানায় প্রায় সাত মাস ধরে শ্রমিকের কাজ করে আসছিলেন মমতা আক্তার। প্রতিদিনের মতো গত শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য কালামপুর-মির্জাপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কাঠালিয়া এলাকা থেকে মমতাকে কারখানার বাসে তুলে দেন তাঁর মা। তখন বাসে শুধু চালক সোহেল ছিলেন। বাসটি আধাকিলোমিটার যাওয়ার পর সোহেল মমতাকে ধর্ষণ করেন। পরে তাঁকে হত্যা করে ফেলে চলে যান। এদিকে শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টা পর্যন্ত মমতা বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা তাঁকে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু তাঁকে পায়নি। রাত ১০টার দিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মমতার বাবা। স্বজনরা রাত সাড়ে ১১টায় মমতার লাশ দেখতে পায় সড়কটির পাশে হিজলীখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিমে পরিত্যক্ত ভিটার জঙ্গলে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। রাতেই বাসচালক সোহেলকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি জেঠাইল থেকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই গতকাল সকালে থানায় হত্যা ও ধর্ষণ মামলা করেন।
আটক সোহেল পুলিশকে জানান, মমতা বাসে উঠার পরই সোহেল তাঁকে ধর্ষণের চিন্তা করেন। পরে বাস থামিয়ে বাতি বন্ধ করে মমতাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। মমতা আত্মরক্ষার্থে সোহেলের হাতের বৃদ্ধ আঙুল কামড়ে মাংস ছিঁড়ে নেন। এরপর চিত্কার দিয়ে বাস থেকে বের হয়ে যান। তখন তাঁকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন সোহেল। পরে লাশ টেনে জঙ্গলটিতে রেখে দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাওয়ালীপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রাসেল মোল্লা আদালতের বরাতে জানান, আসামি সোহেল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাইরুজ তাসনিনের কাছে ১৬৪ ধারায় মমতাকে ধর্ষণ ও হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা ধর্ষণের পর হত্যার কথা আদালতে স্বীকার এবং এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আপনার মতামত জানান