ঘের দিয়ে মাছ শিকার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় মেঘনা নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ ও আশপাশের শাখা নদে অবৈধভাবে ঘের তৈরি করে মিঠা পানির বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ও পোনা শিকার করা হচ্ছে। এতে মৎস্যসম্পদ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হলেও প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রতি বছরের মতো এ বছরও উপজেলার মেঘনা নদীর নুনেরটেক, আনন্দবাজার, ঝাউচর, চরগোয়ালদী, দুধঘাটা ও মেঘনার শাখা নদী আষাঢ়িয়াচর, নয়াগাঁও, দড়িগাঁও, চরকিশোরগঞ্জ এবং ব্রহ্মপুত্র নদের শম্ভুপুরা থেকে আলিপুরা বাজার পর্যন্ত প্রায় ২৫০টি স্থানে নদ-নদীর দুই পাশের জায়গা দখল করে মাছ ধরা হচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে অবৈধ বাঁধের সংখ্যা।
বাঁধের কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে নৌযান চলাচলও।
নুনেরটেক এলাকায় হোসেন আলীর ঘেরে কাজ করা রহমত মিয়া বলেন, ‘আমরা দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে মাছ শিকার করি। এসব ঘেরের মালিক এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। ’
চয়গোয়ালদীর জসিম উদ্দিন অন্যদের দেখাদেখি ঘের তৈরি করেছেন জানিয়ে বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের বাধা দিলে আমরা ঘের বন্ধ করে দেব। ’
অন্যদিকে জেলে সেন্টু মিয়া বলেন, ‘নদীতে ঘের রাখতে প্রচুর খরচ করতে হয়। না হলে মৎস্য কর্মকর্তা, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডরা এসে ঘের ভেঙে দিয়ে যায়। এ ছাড়া মোবাইল কোর্ট দিয়ে শাস্তি ও জরিমানা করেন। ’
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ নদীর বেশির ভাগ মাছ এক বছর পর প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকে। অর্থাৎ চলতি বছরের পরের বছরে মা মাছে পরিণত হয়। এভাবে নির্বিঘ্নে মা ও পোনা মাছ ধরলে দেশি প্রজাতির মাছ হুমকির মুখে পড়বে।
উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, নদ-নদী দখল করে মাছ আটকে ঘের বা ঝেপ দেওয়া মৎস্য আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও কোনোভাবেই এলাকার প্রভাবশালীদের ঠেকানো যাচ্ছে না। পুলিশ প্রশাসন ছাড়া জেলেদের বাধা দিতে গেলে হামলার শিকার হতে হয়।
আপনার মতামত জানান