গাছের সঙ্গে এ কেমন নিষ্ঠুরতা?

প্রকাশিত



ইতিহাস, ঐতিহ্যের সূতিকাগার, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের আবেশ ছড়ানো তুলির ছোঁয়া আর প্রকৃতির মুগ্ধতা ছড়ানো একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় প্রতিষ্ঠিত এ ফাউন্ডেশনের প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে হাজারো প্রজাতির গাছপালা। প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর সবুজ শ্যামল গাছগুলো ১৫০ বিঘা আয়তনের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সৌন্দর্যকে আরো প্রসারিত করেছে। একটি দৃশ্য চোখে পড়লেই প্রকৃতির টানে ছুটে আসা পর্যটরা বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সর্দার বাড়ির সামনে একটি মেহগনি গাছে পেরেক মেরে বসানো হয়েছে বিদ্যুতের বোর্ড। পর্যটকদেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেকগুলো গাছে পেরেক মেরে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।


শিকড়ের টানে ছুটে আসা প্রকৃতি ও বৃক্ষ প্রেমিকদের ভালো লাগা এবং গর্বের স্থান এ ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের বৃক্ষের প্রতি অযত্ন অবহেলা দেখে অনেক পর্যটক মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে বিষন্ন চিত্তে বাড়ি ফিরে যায়। তাদের প্রশ্ন বিদ্যুতের বোর্ড ও ক্যামেরা গাছে সাটানো ছাড়া কর্তৃপক্ষের অন্য কোনো পন্থা কি নেই?


শুক্রবার ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক প্রকৃতিপ্রেমী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাণিকুলের বেঁচে থাকার জন্য প্রধান উপাদান গাছ। এই গাছের যে প্রাণ আছে, অনুভূতিশক্তি আছে, তা প্রমাণিত। তবে গাছের বাকশক্তি নেই। গাছ সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে আমাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখছে। উপকারের প্রতিদান হিসেবে গাছে পেরেক মেরে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ কি এই তার প্রতিদান দিচ্ছে? তাদের বিবেককে জাগ্রত করা দরকার।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয় তা দিয়ে পানি এবং এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় পচন ধরে। ফলে গাছের খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। একসময় গাছটি মরে যায়।


সোনারগাঁ উপজেলা বন কর্মকর্তা (ফরেস্টার) মো. মামুন মিয়া বলেন, গাছে পেরেক লাগানোয় খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি গাছ মরে সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ্ বলেন, গাছের মধ্যে হয়তো আপাতত লাগানো হয়েছে। পরে সরাই দিতে হবে। গাছের মধ্যে এগুলো লাগানো ঠিক না।

সুত্র: কালের কন্ঠ

আপনার মতামত জানান