করোনা প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে সোনারগাঁ প্রশাসন
![](https://dailysonargaon.com/wp-content/uploads/2020/04/IMG_20200412_192740.jpg)
করোনা ভাইরাস, গোটা বিশ্বে এক আতঙ্কের নাম। এই ভাইরাসটিকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও অঞ্চলে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। আজ সোনারগাঁয়ে একজন আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হয়েছে প্রশাসন।
সোনারগাঁয়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ সহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গনজমায়েত বন্ধ, নিয়ম না মেনে দোকান খোলা রাখা, বিনা কারনে বাসা থেকে বের হওয়া সহ বাজার মনিটরিংএর জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে, সরকারী নির্দেশনা না মানায় জেল-জরিমানাও করা হয়েছে । কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে প্রশাসনের নিরাপত্তার মধ্য দিয়েও সাধারন মানুষকে বের হতে দেখা গেছে রাস্তায়।
প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও বিভিন্ন অলিগলিতে দেখা গেছে মানুষের ভীড়। পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানগুলোও খোলা রাখতে দেখা গেছে। একজন সচেতন নাগরিক জানান, কেন এই লুকোচুরি? এটাতো প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি না, আমরা নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই করছি।
প্রত্যেককে সচেতন করতে, ঘরে থেকে নিজেদের পরিবারকে সুরক্ষার জন্য সবাইকে বার বার অনুরোধ করার পরও কেউ সচেতন না হওয়ায় সোনারগাঁয়ে করোনা প্রতিরোধে কঠোরভাবে কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম। তিনি জানান, সোনারগাঁবাসীকে নিরাপদে রাখতে কঠোর হতে বাধ্য হব, সরকারী নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
’
বিভিন্ন সড়কে চেকপোষ্ট বসিয়ে যারা বিনা কারনে বাসা থেকে বের হয়েছেন আটকে দেয়া হচ্ছে তাদের যানবাহন। বাসা থেকে বের না হওয়ার জন্য করা হচ্ছে মাইকিং। সোনারগাঁ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, করোনা প্রতিরোধে ইতিমধ্যে থানা কর্তৃক সচেতনতা মূলক বহু প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে, অপ্রয়োজনে ঘরের বাহির যেতে নিষেধ সহ সরকারী সকল নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক যে দোকান সমূহ খোলা রাখার কথা রয়েছে শুধুমাত্র ঔষধ তথা মেডিকেল সার্ভিস সমূহ ব্যতিত সকল দোকান এমনকি খাবারের দোকান, কাঁচা বাজারের দোকান, মুদি দোকান দুপুরের আগে বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়া পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো সকাল থেকে দুপুর দুটো’র মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অপ্রয়োজনে কাউকে ঘরের বাহির পাওয়া চলবে না। এ নির্দেশ অমান্য করলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার সহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পলাশ কুমার সাহা জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সকল ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন সকলকে সুস্থ্য রাখার জন্য। সোনারগাঁয়ের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ইতোমধ্যে ইমার্জেন্সি সার্ভিসের জন্য দু’টি এম্বুল্যান্স ব্যবস্থা করেছেন। স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ২৪/৭ আমাদের সব ব্যবস্থাই প্রস্তুত আছেঃ Covid-19 নমুনা সংগ্রহের জন্য ও যেকোন স্বাস্থ্য সমস্যায় -০১৭৩০৩২৪৫৩৩ এবং বিনামূল্যে এম্বুল্যান্স সার্ভিস পেতে -০১৮৩৯৩১৭৮৬৪ এ নাম্বার দুটিতে যোগাযোগের কথা জানান তিনি।
সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল আমিন বলেছেন.‘ সরকারি নিয়ম না মেনে কেউ দোকান খোলা রাখলে, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখলে এবং অপ্রয়োজনে ঘরেই বাইরে বের হলে ভ্রাম্যমান আদালত তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও মাক্স, হ্যান্ডগ্লোবস সম্ভব হলে পিপিই পড়ার আহবান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকার, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংগঠন জনসাধারণকে সচেতন করতে লিফলেট, স্যানিটাইজার, মাস্ক ও খাবারসহ বিভিন্ন উপকরন বিতরন করছে। এছাড়াও থানা, উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকায় হাতধোয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও সচেতন হচ্ছে না এক শ্রেণির মানুষ। যারা সরকারী নির্দেশ অমান্য করে গণজামায়েত অবাধে ঘুরাফেরা ও চায়ের দোকানে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিচ্ছে এতে করে করোনার ঝুঁকি কয়েকগুন বেড়ে যাচ্ছে।
সোনারগাঁবাসীর উদ্যেশে তিনি বলেন, আপনাকে ভালো রাখতে আমরা সব সময় পথেই আছি। টীম সোনারগাঁ আছে সব সময় আপনার পাশে। আপনি ঘরে থাকুন তাহলেই ভালো থাকবো আমরা সবাই…
আপনার মতামত জানান