ঐতিহাসিক উপনির্বাচনে ৪০ ভোটের জয়
ঐতিহাসিক নির্বাচন বলতেই হবে। এমন জাকজমক পূর্ণ নির্বাচন আর এত ভোটারের উপস্থিতি কবে দেখেছে তার দিন তারিখ কারো মনে নেই। ভোটের দিনে চারিদিকে রাস্তা জুড়েই শতশত নারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধের আনন্দমুখর চলাফেরা দেখে মনে হয়েছেএ যেন সেই আগের বৈশাখী মেলার দৃশ্য। চারিদিকে উৎসবের আমেজ। সকলের যাত্রাপথ একটি জায়গাকে কেন্দ্র করে। ১০০ নম্বর চৌড়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে মানুষ সামলানো যেন মুসকিল হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের দুইটি প্রবেশপথ। একদিক দিয়ে পুরুষ ও অন্যদিক দিয়ে মহিলারা প্রবেশ করছে। প্রবেশ করে তাদের নাগরিকত্ব মূল্যায়নের একমাত্র অধিকারটুকু নিজ হাতে প্রয়োগ করতে পেরে চোখে মুখে রাজ্য জয়ের ঝিলিক।
জানা যায়, আজ সকাল থেকে চলছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ড উপনির্বাচনের ভোট গ্রহন। নির্বাচনে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সকাল থেকেই ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
ভোট দিতে আসা এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কত বছর পর এত নিশ্চিন্তে ভোট দিলাম মনে নেই।’
এদিকে গত ২০০৫ সালে ভোটার হয়ে জীবনের প্রথম ভোট দিতে পেরে আনন্দিত রফিক মিয়া।
এলাকাবাসী জানান, ৬নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার আলেক মিয়া গত প্রায় তিনমাস আগে হৃদরোগে মারা যান। ওই ওয়ার্ডে উপনির্বাচনে তালা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তার ছেলে মোক্তার হোসেন ও মোরগ প্রতীক নিয়ে সাবেক মেম্বার জজ মিয়ার ছেলে সাকিব হাসান।
প্রার্থী মোক্তার হোসেন বলেন, ভোটারের উপস্থিতি অবাক করার মতো। আমরা বাড়ি বাড়ি প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কথা বুঝাতে পেরেছি। গতরাতে আমাদের উপর একটি প্রভাবশালী মহলের সন্ত্রাসী হামলায় ওসি সাহেব যে ভূমিকা রেখেছেন এতে মানুষ বিশ্বাস করেছে ভোট কেন্দ্রে কোনো রকম সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলবে না। তাই মানুষ ভোট দিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়ি যাচ্ছে।
অন্য প্রার্থী সাকিব হাসান জানান, ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারছে এটাই তাদের সফলতা। জয় পরাজয় যাই হোক তা মেনে নিয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে চান।
সহকারি প্রিজাউডিং অফিসার একেএম রেজোয়ানুল হক টিটু জানান, সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫টা পযন্ত ভোট গ্রহন শেষে দেখা যায় ২২৫৯ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১৭০৫ জন ভোটার। এর মধ্যে ১৩টি ভোট বাতিল হয়েছে। বিজয়ী প্রার্থী সাবেক জজ মিয়া মেম্বারের ছেলে সাকিব হাসান পেয়েছেন ৮৬৬ ভোট। তার চেয়ে ৪০ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হন সদ্যগত আলেক মেম্বারের ছেলে মোক্তার হোসেন।
ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। গতকাল আমরা এলাকায় এসে প্রতিটি মানুষকে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেছি।
সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন বলেন, মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছে। সুশৃঙ্খলভাবে যাতে সবাই ভোট দিতে পারে তার জন্য গ্রাম পুলিশ কাজ করছে। নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠ করতে র্যাব, পুলিশ ও রিজার্ভ পুলিশ কাজ করছে।
আপনার মতামত জানান