এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ, সেবা প্রার্থীদের দুর্ভোগ
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে এসে নামজারি, ভূমি উন্নয়নকর পরিশোধসহ নানা ধরনের সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। এমন অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দা সালেহা নূরের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, গত ১৮ এপ্রিল সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন সৈয়দা সালেহা নূর। যোগদানের পর থেকেই বেশিরভাগ সময়ে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে অফিসের বাইরে ছিলেন। ফলে সেবাপ্রার্থীরা দিনের পর দিন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। নামজারি, মিসকেস মামলা, মামলার শুনানি, খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদান, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়সহ অন্যান্য কাজে গড়িমসি করায় বিভিন্ন সময় ফিরে যাচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জানান, নতুন যোগদানকৃত এসিল্যান্ডের স্বেচ্ছাচারিতা ও কাজে গড়িমসির কারণে তারাও ভোগান্তি পোহাচ্ছে। প্রতিদিন সেবাপ্রার্থীরা ক্ষোভে অশালীন আচরণ করছেন বলেও জানান তারা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সামনে ১০-১৫ জন সেবাপ্রার্থী জটলা করে আছেন। কী কারণে এমন জটলা জানতে চাইলে অসন্তোষ প্রকাশ করে তারা জানান, এসিল্যান্ড প্রায়ই বিভিন্ন অজুহাতে অফিসে অনুপস্থিত থাকে। একথা বলে ভূমি কর্মকর্তার কাজে গড়িমসি ও গাফিলতির কথা তুলে ধরেন।
পিরোজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলেরগাঁও গ্রামের সেলিম হোসেন জানান, এই এসিল্যান্ড আসার পর কার্যালয় তাদের বাড়িঘর হয়ে গেছে। প্রতিদিন এসেও কাজের কোনো সুরাহা করতে পারছেন না। গত দুই মাস ধরে কাজের কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন।
মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম স্বপন নামের আরেক সেবাপ্রার্থী বলেন, আমি দুই মাসের বেশি হবে খারিজের জন্য জমা দিয়েছি কিন্তু এসিল্যান্ড কাজ না করায় আমাদের ভীষণ ভোগান্তি হচ্ছে। এসিল্যান্ডের এ রকম গড়িমসিতে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের একাধিক কর্মচারী জানান, এসিল্যান্ড ভূমির কাজ না বোঝার কারণে কাজ করছেন না। প্রায় তিন হাজারের বেশি নামজারির ফাইল আটকা পড়ে রয়েছে। এগুলোর কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
সোনারগাঁ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদ সরকার বলেন, রেজিস্ট্রি খরচ বাড়ার কারণে এমনিতেই দলিল রেজিস্ট্রি কমে গেছে। তার উপর এসিল্যান্ড কোনো কাজ না করায় দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে না। আমরা খুবই বিপদে আছি।
সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দা সালেহা নূরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার সরকারি মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, এসিল্যান্ড দু’দিনের ছুটিতে আছেন। ভোগান্তির বিষয়টি অনেকে বলেছেন। ঈদের এক সপ্তাহ পর থেকে ভূমি সেবা স্বাভাবিক হবে।
আপনার মতামত জানান