অসহায় পরিবারের জমি দখল করছে জনপ্রতিনিধি সিন্ডিকেট, অভিযোগ

প্রকাশিত

এক অসহায় পরিবারের সাড়ে আঠারো শতক জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। দখলদার ভুমি দস্যুদের কাছ থেকে মুক্তি ও সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য গতকাল সকালে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আব্দুল মতিন।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের শান্তিরবাজার এলাকায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে অসহায় এক পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। গত কয়েকদিন ধরে ওই জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী জমির মালিককে হত্যার হুমকি দেওয়ায় বাড়ি ছেড়ে পলিয়ে বেড়াচ্ছে জমির মালিক আব্দুল মতিন। বর্তমানে আব্দুল মতিন ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে জানিয়েছেন আব্দুল মতিন। ঘটনার পর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যানের প্রভাবে মামলা নেয়নি সোনারগাঁ থানা পুলিশ। পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার দুপুরে ভূক্তভোগী আব্দুল মতিন পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে নির্মাণ কাজ বন্ধ করেন।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের বাস্তমবাগ গ্রামের আঃ আউয়ালের ছেলে আব্দুল মতিন পৈত্রিক সম্পত্তির হেবা দলিল মূলে জমির মালিকানা পান। ওই জমির পাশ্ববর্তী আঃ মান্নানের কাছ থেকে ৩৭.৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করে চেয়ারম্যান সিন্ডিকেট। কিন্তু ওই জমির মধ্যে আঃ মান্নানের সিএস ও আরএস রেকর্ডীয় মূলে মালিক ১৮.৭৫ শতাংশ। আঃ মান্নান তার মালিকানার অর্ধেক বেশি জমি বিক্রি করায় ওই জমি চেয়ারম্যান জহিরুল হকের নেতৃত্বে অত্র ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার হাবু, ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার ফারুক, ১নং ওয়ার্ড মেম্বার ছানু, মো. জাফর, মো. হোসেন, আমান, ইকবাল, আবুল কাশেম, আলমের একটি সিন্ডিকেট জোড়পূর্বক দখল করে নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে আব্দুল মতিন জমি দখলে বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে জমি দখলে নেওয়ার নারায়ণগঞ্জ আদালত, সোনারগাঁ উপজেলা ভূমি কার্যালয় ও নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সিসি ঢালাই দিয়ে তাদের অংশের জমিতে মার্কেটের পিলার নির্মাণ শেষ হয়েছে। নালিশী জমিতে পিলারের বেইসের মাটি কেটে রাখা হয়েছে। এ বেইসে সিসি ঢালাইলের মাধ্যমে পিলার নির্মাণ করা হবে। পাশে ভবন নির্মাণের সরঞ্জাম এনে রাখা হয়েছে।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, চেয়ারম্যান জহিরুল হকের নেপথ্য নের্তৃত্বে ও মদদে সম্পত্তি দখলের পায়তারা করছে। এলাকাবাসী জানান, মানুষের জমির অংশ কিনে বিচার শালিসের ওই সিন্ডিকেটকে সহযোগিতা করে স্থানীয় চেয়ারম্যান। বারদী এলাকায় তার নেতৃত্বে সরকারী খাস জমি দখল করে লিজ নেওয়ার পর দোকান বিক্রি করে কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়েছে।

ভূক্তভোগী আব্দুল মতিন জানান, বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হকের নেতৃত্বে এ সিন্ডিকেট আমার জমির মালিকানা নিয়ে তিনটি স্থানে মামলা চলমান থাকাবস্থায় জমি দখল করে নেয়। আমি সিন্ডিকেটের হুমকির কারনে বাড়িতে যেতে পারছিনা। তাদের ভয়ে পরিবারসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

অভিযুক্ত বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হক বলেন, আমি এ দখলের সাথে জড়িত না। কোন কাগজে আমার নাম নেই। তবে সিন্ডিকেটর মধ্যে পরিষদের কয়েকজন সদস্য রয়েছে। বিষয়টি আমি অবগত আছি। ভূক্তভোগী পরিবার সঠিক বিচার পাইয়ে দিতে প্রয়োজনে সহযোগিতা করবো।

সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে।

আপনার মতামত জানান