অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান
সৃজনশীল প্রশ্ন
পঞ্চম অধ্যায় :
সমন্বয় ও নিঃসরণ
প্রশ্ন : স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশ হলো মস্তিষ্ক। উন্নত মস্তিষ্কের অধিকারী হিসেবে মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব। গুরুমস্তিষ্ক, মধ্যমস্তিষ্ক ও লঘুমস্তিষ্ক নিয়ে মানুষের মস্তিষ্ক গঠিত। মস্তিষ্ক অসংখ্য নিউরন দ্বারা গঠিত। আর এই কারণে দেহের যাবতীয় অংশের কাজের সমন্বয় সাধন ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে।
ক) হরমোন কী?
খ) বৃক্ককে মানবদেহের ছাঁকনি বলা হয় কেন?
গ) গুরুমস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের ভূমিকা লেখো।
ঘ) ‘মস্তিষ্ক হলো দেহের যাবতীয় কাজ নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রবিন্দু’- মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর :
ক) যে রাসায়নিক বস্তুটি কোষে উৎপন্ন হয়ে উৎপত্তিস্থল থেকে বাহিত হয়ে দূরবর্তী স্থানের কোষের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে তাকেই হরমোন বলে।
খ) আমাদের দেহে বিপাকীয় ক্রিয়ার ফলে যকৃতে অতিরিক্ত অ্যামাইনো এসিড ভেঙে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, অ্যামোনিয়া প্রভৃতি নাইট্রোজেন দ্বারা গঠিত বর্জ্য পদার্থ তৈরি করে। এগুলো আমাদের দেহে ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে; তবে দেহের পেছনের দিকে মেরুদণ্ডের দুই পাশে অবস্থিত বৃক্ক দুটি দেহের রক্ত থেকে এসব ক্ষতিকর পদার্থ ছেঁকে নিয়ে নিষ্কাশনে সহায়তা করে। এ কারণেই বৃক্ককে মানবদেহের ছাঁকনি বলা হয়ে থাকে।
গ) স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশ হলো মস্তিষ্ক। গুরুমস্তিষ্ক, মধ্যমস্তিষ্ক ও লঘুমস্তিষ্ক নিয়ে মানুষের মস্তিষ্ক গঠিত। মস্তিষ্কের প্রধান অংশ হলো গুরুমস্তিষ্ক বা সেরিব্রাম। এর ডান ও বাঁ সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলে। এই দুই খণ্ড ঘনিষ্ঠভাবে স্নায়ুতন্তু দ্বারা সংযুক্ত। এর উপরিভাগ ধূসর বর্ণের হওয়ায় একে ধূসর পদার্থ বা গ্রে ম্যাটার বলে।
গুরুমস্তিষ্কের অন্তঃস্তরে শুধু স্নায়ুতন্ত্র থাকে। এখানে কোনো স্নায়ুকোষ থাকে না। স্নায়ুতন্তুর রং সাদা হওয়ায় একে শ্বেত পদার্থ বা হোয়াইট ম্যাটার বলে।
শ্বেত পদার্থের ভেতর দিয়ে স্নায়ুতন্তু এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায়। ধূসর পদার্থের কয়েকটি স্তরে বিশেষ আকারে স্নায়ুকোষ দেখা যায়। এই স্নায়ুকোষগুলো গুরুমস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে গুচ্ছ বেঁধে স্নায়ুকেন্দ্র সৃষ্টি করে। এগুলো বিশেষ বিশেষ কর্মকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। দর্শন, শ্রবণ, ঘ্রাণ, চিন্তাচেতনা, স্মৃতি, জ্ঞান-বুদ্ধি, বিবেক ও পেশি চালনার ক্রিয়াকেন্দ্র গুরুমস্তিষ্কে অবস্থিত।
ঘ) ‘মস্তিষ্ক হলো দেহের যাবতীয় কাজ নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রবিন্দু।
মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্রের সবচেয়ে বড়, জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি গুরুমস্তিষ্ক, মধ্যমস্তিষ্ক ও লঘুমস্তিষ্ক, মেডুলা ইত্যাদি অংশ নিয়ে গঠিত। স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশ হলো মস্তিষ্ক। যার মধ্যে আছে অসংখ্য নিউরন। আর এ কারণে দেহের যাবতীয় অংশের কাজের সমন্বয় সাধন ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে।
গুরুমস্তিষ্ক দর্শণ, শ্রবণ, ঘ্রাণ, চিন্তা-চেতনা, স্মৃতি, জ্ঞান বুদ্ধি, বিবেক ও পেশি চালনার ক্রিয়াকেন্দ্র।
লঘুমস্তিষ্ক দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে। এ ছাড়া কথা বলা ও পেশি চালনা নিয়ন্ত্রণ করে।
মধ্যমস্তিষ্ক দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে।
মেডুলা অংশ হৃৎস্পন্দন, খাদ্য গ্রহণ, শ্বসন ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।
এককথায় বলতে গেলে মস্তিষ্ক দেহের যাবতীয় কাজ নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রবিন্দু।
আপনার মতামত জানান