অপহৃত শিশুকে ৯ ঘণ্টার মধ্যে মায়ের কোলে শিশুকে ফিরিয়ে দিল পুলিশ
নারায়ণগঞ্জ আদালতের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের প্রভাষক উম্মে সালমা দম্পতি সোমবার দুপুরে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে জেগে দেখেন তাদের ১৬ মাস বয়সের সন্তান জাফনাথ সাঈদা ঘরে নেই। পুরো বাড়ি ও এলাকা খোঁজাখুঁজির পর দেহেন তাদের গৃহকর্মীও নেই। বিষয়টি টের পেয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়েরের ৯ ঘণ্টার মধ্যে সোনারগাঁ থানা পুলিশ গতকাল রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মহাখালী উড়াল সেতুর নিচ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দেন এবং অপহরণে জড়িত অভিযোগে স্থান থেকেই এক কিশোরীকে (১৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, জহিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে মোগরাপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। সোমবার বিকেলে জহিরুল ও তার স্ত্রী ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় বাড়ির গৃহকর্মী শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান না পেয়ে সেদিন বিকেলেই সোনারগাঁ থানায় গৃহকর্মীকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন জহিরুল ইসলাম।
মামলার পর নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিল্লাল হোসেন ও সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে থানা-পুলিশের একাধিক দল কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।
ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, অভিযুক্ত কিশোরী এক সময় তেজগাঁও সাততলা বস্তিতে বসবাস করত এ তথ্যের ভিত্তিতে সাততলা বস্তিতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বস্তির কয়েকজন বাসিন্দার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মহাখালী উড়াল সেতুর নিচ থেকে অপহৃত শিশু জাফনাথ সাঈদাসহ অভিযুক্ত কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এরপর অপহরণের মামলায় কিশোরীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হাফিজুর রহমান আরো বলেন, অভিযুক্ত কিশোরী মাদক সেবন ও বিক্রির সাথে জড়িত ছিল বলে জানা যায়। ২৫ দিন আগে সে জহিরুল-সালমা দম্পতির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোরী স্বীকার করেছে মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. ওবায়দুর রহমান জানান, ওই কিশোরীকে গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে রাতেই তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মামলার বাদী জহিরুল ইসলাম বলেন, কিশোরীটি মাদকাসক্ত ছিল এটা আমাদের জানা ছিল না। এখন বুঝতে পারিছি তথ্যগোপন করে সে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের বাসায় কাজ নেয় এবং আমাদের সন্তানকে অপহরণ করে। সোনারগাঁ থানা পুলিশের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ যে তারা যদি তাৎক্ষণিকভাবে তৎপরতা না চালাত তবে আমরা আজ সন্তানহারা হতাম।
সুত্র: কালের কন্ঠ
আপনার মতামত জানান